পিরোজপুরে স্কুল শিক্ষকের আঘাতে অসুস্থ ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র


প্রকাশিত: ০৯:০৬ এএম, ১১ জুলাই ২০১৫

পিরোজপুরে স্কুল শিক্ষক কতৃক ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রকে মুখমন্ডলে চড় দিয়ে আহত করার ঘটনায় দায়ী স্কুল শিক্ষক অরুণ কৃষ্ণ কর্মকারের শাস্তি দাবি করেছেন ওই ছাত্রের অভিভাবকরা। শনিবার সকালে পিরোজপুর প্রেসক্লাবে এক সম্মেলনে তারা এ দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ছাত্রের বাবা মো. জাহাঙ্গীর আলম। এসময় শিক্ষকের আঘাতে অসুস্থ হওয়া স্কুল ছাত্র মো. জিন্নাত শেখ, তার মা জোছনা বেগম উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলন জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করেন, তার ছেলে পিরোজপুর টাউন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। গত ২ জুন বাংলা ২য় পত্রের পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষার খাতা দিতে দেরি হওয়ায় পরীক্ষা হলের শিক্ষক অরুণ কৃষ্ণ কর্মকার জিন্নাতের মুখমন্ডলে চড় মারেন। এতে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে রাতে জিন্নাত আরো অসুস্থ এবং অজ্ঞান হয়ে পড়লে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন তাকে খুলনা ইসলামী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তার অবস্থা আরো খারাপের দিকে। জিন্নাত এখন কথা বলতে পারছে না, খেতে পারছে না।

জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত এক মাসে জিন্নাতকে পিরোজপুর, খুলনা ও বরিশালের বিভিন্ন চিকিৎসককে দেখানো হয়েছে। এতে তার ৫০/৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তার আরো উন্নত চিকিৎসা করানো দরকার। কিন্তু এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো সহযোগিতা করছেন না। তিনি জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষ ছেলের চিকিৎসার খরচ বহন করার কথা বললেও তারা প্রাথমিকভাবে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে সহায়তা করার পর অদ্যাবধি কোনো খোঁজ খবর নেননি।  এমনকি অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করেনি। তিনি অভিযুক্ত শিক্ষক অরুন কৃষ্ণ কর্মকারের বিচার দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে কান্না জড়িত কণ্ঠে জিন্নাতের মা জোছনা বেগম বলেন, আমার ছেলে খেতে পারে না, কথা বলতে পারে না, হাঁটতে পারে না। স্কুল শিক্ষকের কারণে আজ আমার ছেলের এই করুণ দশা। অথচ সেই শিক্ষক এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। বেআইনি কাজ করে তার কোনো বিচার হয়নি, শাস্তি হয়নি।

তিনি বলেন, ছেলের অসুস্থতার কারণে আমাদের শব-ই-বরাত, ঈদ সব শেষ হয়ে গেছে। তিনি জানান, আহত করার ঘটনায় পিরোজপুর সদর থানায় একটি অভিযোগও দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২ জুন পরীক্ষা চলাকালে টাউন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র জিন্নাত শেখকে চড় মারেন স্কুল শিক্ষক অরুণ কৃষ্ণ কর্মকার। পরবর্তীতে জিন্নাত অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে পিরোজপুর সদর হাসপাতালসহ খুলনা, বরিশালে চিকিৎসা দেয়া হয়। খুলনা ইসলামী হাসপাতালে তার সিটিস্ক্যান করানো হয়। অসুস্থ স্কুল ছাত্রের বাবা জাহাঙ্গীর আলম পিরোজপুর পৌর বাজারের একজন মুদী ব্যবসায়ী।

এদিকে, এ ঘটনার বিষয়ে পিরোজপুর টাউন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের সরদার জাগো নিউজকে জানান, এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি ছাত্রকে চড় মারার সত্যতা পায়নি। তবে অভিভাবকদের মৌখিক অভিযোগ এবং ছাত্রের চিকিৎসার জন্য স্কুল থেকে কিছু আর্থিক সাহায়তা দেয়া হয়েছে।

হাসান মামুন/এমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।