বরকলে সংঘর্ষ : গ্রেফতার আতঙ্কে এলাকাছাড়া অনেকে
রাঙ্গামাটির বরকলে ১৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকে।
ওইদিন ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনকে কেন্দ্র করে উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়নের এরাবুনিয়া গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় বরকল থানায় দায়ের করা মামলা অনেকেরে বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন বরকল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবু বকর মোল্লা, ভূষণছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. আবু সাঈদ, সদস্য মো. আজমত আলীসহ অন্যরা।
তারা জানান, ঘটনার দিন সকালে ভূষণছড়া বাজারে মোটরবাইক চালক সমিতির সভাপতি ইলিয়াস মোল্লা এক বাইক চালককে সানগ্লাস না লাগানোর দায়ে ৫০ টাকা জরিমানা করেন।
এ নিয়ে বাইকের যাত্রী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোতালেব মুন্সীর মেয়ের জামাই আক্তারের সঙ্গে ইলিয়াস মোল্লার বাক-বিতণ্ডা হয়।
এতে মোতালেব মুন্সী ক্ষুব্ধ হয়ে এরাবুনিয়া বাজারে মোটরবাইক চালানো বন্ধ করে দেন। পরে ঘটনা জানতে পেরে ইলিয়াস মোল্লা কয়েক বাইক চালকসহ এরাবুনিয়া বাজারে গেলে স্থানীয় দুলাল পিসিসহ মোতালেব মুন্সী ও তার দলবল নিয়ে ইলিয়াস মোল্লার ওপর হামলা চালায়।
এ সময় ইলিয়াস মোল্লাসহ কয়েক জন রক্তাক্ত হন। হামলায় কয়েকটি মোটরবাইক ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে ভূষণছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ মামুনসহ এরাবুনিয়া বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। পরে তারা আহতদের চিকিৎসার জন্য রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে পাঠান এবং ঘটনার ন্যায় বিচারের আশ্বাস দেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবু বকর মোল্লাসহ অন্যরা দাবি করে বলেন, ঘটনাটির সুযোগ নিয়ে কেউ কেউ ব্যক্তি স্বার্থে তা দলীয়ভাবে রূপ দেয়ার চেষ্টা চালায়। এতে ফায়দা লুটতে দুলাল পিসি ও মোতালেব মুন্সী ভূষণছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মামুনসহ স্থানীয় যুবলীগ ও কৃষক লীগের নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেন।
মামলার পর গ্রেফতার অভিযান চালায় বরকল থানা পুলিশ। এতে গ্রেফতার আতঙ্কে বর্তমানে এলাকা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। এরাবুনিয়ার নিরীহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ কর্মীরা পাহাড়ের বনে জঙ্গলে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
বরকল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফজল আহম্মদ জানান, ওই ঘটনায় ভূষণছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোতালেব মুন্সীর মেয়ে রাশেদা বাদী হয়ে বরকল থানায় মামলা করেন। মামলায় ভূষণছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা মামুনুর রশীদ মামুনকে ১ নম্বর আসামি করে ২৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ৫ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে চালান দেয়া হয়েছে।
সুশীল প্রসাদ চাকমা/এএম/জেআইএম