বান্দরবানে আ.লীগের ২১ নেতাকর্মী বহিষ্কার
বান্দরবানে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের ২১ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। সোমবার সন্ধ্যায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নেয় জেলা আওয়ামী লীগ।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ মিলনায়তনে জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরী সভায় তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করার পর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্য শৈ হ্লা’র সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম চৌধুরী, এ কে এম জাহাঙ্গীর, পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য লক্ষী পদ দাশ, মো. ইসহাকসহ অঙ্গ সংগঠনের সিনিয়র নেতারা।
সভায় ছাত্রলীগের সম্মেলনে হামলার ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ২১ নেতাকর্মীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ঘটনার দিনে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
বহিষ্কৃতরা হলেন, দেশ টিভির বান্দরবান প্রতিনিধি ও কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য সচিব আহসানুল আলম রুমু, মো. ইব্রাহিম, মো. ইমরান উদ্দিন, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. আরিফ, ফরহাদ হোসেন, রুবেল, মো. রোকন, মো. তারেক, শিমুল দাশ, পলাশ তঁঞ্চঙ্গ্যা, মাস্টার বাবু, তাপস দাশ, মো. জলিল, মেহেদি হাসান মানিক, ময়না রাজু, মো. মোমেন, চ্যানেল নাইন এর বান্দরবান প্রতিনিধি এন এ জাকির, পঙ্কজ নাথ, রনি মল্লিক, বাপ্পি ও মল্লিক। তারা সবাই আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমীকলীগ ও সেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মী।
বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্য শৈ হ্লা বলেন, দলের সর্বসম্মতি সিদ্ধান্ত ক্রমে বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
৬ জুন শনিবার বিকেলে পূর্বঘোষণা মতে স্থানীয় রাজারমাঠে জেলা ছাত্রলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী আহসানুল রুমুর নেতৃত্বে সম্মেলনে হামলা চালান হয়। সম্মেলনে হমলার ঘটনায় ১৫ জন আহত হন। ফলে সম্মেলন পণ্ড হয়ে যায়। পরে কমিটি ঘোষণা না করেই কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা বান্দরবান ত্যাগ করেন। ঘটনার পরে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি।
জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক সাদেক হোসেন চৌধুরী জানান, ঘটনার পর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুরের বাসায় গিয়ে তার কাছে মাফ চায় অভিযুক্তরা।
প্রসঙ্গত, জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে হামলার ঘটনায় পুলিশ ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বাদী হয়ে ২টি পৃথক মামলা করেন থানায়। ১ জুলাই জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে অভিযুক্তরা জামিন বর্ধিতকরণের জন্য আবেদন করলে আদালত আহসানুল আলম রুমু, জাকির হোসেন, মো. আরিফ, সাইফুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা বাপ্পি মল্লিক, সোহরাব হোসেন কুট্টি ও সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. ইব্রাহীমের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই মামলার অপর ১১ আসামিকে অব্যাহতি দেয়া হয় ।
সৈকত দাশ/এমএএস/আরআইপি