সখীপুরে সাপের কামড়ে ১ মাসে ৫ জনের মৃত্যু
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় এক মাসে সাপের কামড়ে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাপের কামড়ে আক্রান্ত রোগীকে বাঁচানোর জন্য টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ জেলার সবটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিন রাখার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার বেশির ভাগ বনাঞ্চল ও পাহাডি এলাকা হওয়ায় এসব অঞ্চলে বিষধর সাপের উপদ্রব বেশি। উপজেলার সুরীরচালা আবদুল হামিদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী সোহেল রানা পরীক্ষার ফল প্রকাশের কয়েক দিন আগে সাপের কামড়ে মারা যায়। এছাড়া গত ৩০ মে বাজাইল গ্রামের মো. ইসমাইল হোসেন (২৫), গত ১৮ জুন বড়চওনা গ্রামের কছিম উদ্দিন ওরফে কচু খাঁ (৫০) নামের এক সাপুড়ে।
গত ২৬ জুন বহুরিয়া চতলবাইদ গ্রামের ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম (৪০) ও সর্বশেষ গত শনিবার সন্ধ্যায় বেড়বাড়ী গ্রামের শহীদুল ইসলামের ছেলে স্বপন মিয়া (২৫) বিষধর সাপের কামড়ে মারা যান।
সিরাজুলের বড় ভাই মোস্তফা কামাল অভিযোগ করে বলেন, সাপের কামড়ের পর সিরাজুলকে মাইক্রোবাসে করে প্রথমে মধুপুর জলছত্র হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ভ্যাকসিন না পেয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ভ্যাকসিন থাকলে সিরাজুলের মৃত্যু হত না বলে দাবি করেন তিনি।
সুরীরচালা আবদুল হামিদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দিন বলেন, প্রতি বছরই এ এলাকায় বিষধর সাপের কামড়ে সাধারণ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এ উপজেলায় সরকারি উদ্যোগে সম্ভব না হলেও বেসরকারি অথবা বিভিন্ন সংস্থার উদ্যোগে সাপের বিষের প্রতিষেধক এই ভ্যাকসিন রাখা হলে সম্ভব হলে অন্তত এ অস্বাভাবিক মৃত্যৃর হার কিছুটা হ্রাস পেত।
সখীপুর বন বিভাগের বহেড়াতৈল রেঞ্জের কর্মকর্তা মো. নূরুল ইসলাম জানান, শাল-গজারি বেষ্টিত লাল মাটির উঁচু অঞ্চল হওয়ার কারণে সখীপুর বিষধর সাপের অভয়ারণ্য হিসেবে খ্যাত। সখীপুরে দাঁড়াশ, গোখরা নামের বিষধর সাপের বিচরণ বেশি। বন প্রহরীদের এ সাপ থেকে সতর্ক হয়ে সব সময় থেকে দায়িত্ব পালনের পরামর্শ দেয়া হয়।
সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ডিআই) রেজাউল করিম বলেন, সাপের ভ্যাকসিন সংরক্ষণ প্রক্রিয়া বেশ জটিল। এছাড়া ভ্যাকসিন দিতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত জনবলের প্রয়োজন। জেলার কোনো উপজেলাতেই সাপের কামড়ের কোনো চিকিৎসা নেই বলে জানান তিনি।
এআরএ/এমআরআই