কক্সবাজারে উদ্ধার হয়নি অপহৃত ২ যুবক, মুক্তিপণ দাবি
কক্সবাজারের ঈদগাঁও-ঈদগড় সড়কে ডাকাতির পর অপহরণের শিকার দুই যুবক ২৪ ঘণ্টায়ও উদ্ধার হয়নি। উপরন্তু অপহরণকারী চক্র ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে জানিয়েছে তাদের পরিবার।
মঙ্গলবার রাত সোয়া ১০টার দিকে ঈদগাঁও-ঈদগড় সড়কের গজালিয়া পানেরছড়া ঢালা এলাকায় এ ডাকাতি ও অপহরণের ঘটনা ঘটে। এসময় অপহরণকারীরা যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে দু'জনকে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যায়।
বুধবার রাত ৯টা পর্যন্ত তাদের উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃংখলা বাহিনী। তাদের উদ্ধারে গহীন পাহাড়ে অভিযান অব্যহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অপহৃতরা হলেন, রামু উপজেলা ঈদগড় ইউনিয়নের বাইতুশ শরফ এলাকার খুইল্যা মিয়ার ছেলে নুরুল আমিন ও মৃত আছহাব মিয়ার ছেলে হেলাল উদ্দিন।
সূত্র জানায়, কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঈদগাঁও বাস স্টেশন এলাকা হতে একটি সিএনজি অটোরিকশায় ও একটি মোটরসাইকেল যোগে ঈদগড়ের বাসিন্দারা রাত ১০টার দিকে বাড়ি ফিরছিলেন। কক্সবাজার সদরের ইসলামাবাদ ইউনিয়নের পাহাড়ি অংশ গজালিয়া পানেরছড়া ঢালা এলাকায় পৌঁছা মাত্র ৮-১০ জন সশস্ত্র মুখোশধারী দুর্বৃত্ত রাস্তায় ব্যারিকেড দেয়। গাড়িগুলো দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের নামিয়ে প্রহারের পর সঙ্গে থাকা নগদ প্রায় অর্ধলাখ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। যাবার সময় অপরাধীরা নুরুল আমিন ও হেলাল উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
সিএনজির যাত্রী আব্দুল্লাহ নামে একজন জানান, তাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার সময় পাহাড়ি সরু পথে হাঁটতে গিয়ে তিনি কৌশলে জঙ্গলে ঢুকে পালিয়ে আসেন। কিন্তু তার দুলাভাই নুরুল আমিনকে অপহরণকারীরা নিয়ে গেছে।
ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক (তদন্ত) মিনহাজ মাহমুদ বলেন, অপহৃতদের উদ্ধারে অভিযান চালানো হচ্ছে। বুধবার রাত ৯টা পর্যন্ত অপহৃতদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
রামু থানার ঈদগড় পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এ এস আই মোরশেদ আলম জানান, ঘটনাস্থলটি আমার আওতার বাইরে। এরপরও ঈদগড় এলাকার বাসিন্দা অপহৃত হওয়ার খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট সিএনজিটি আটক করা হয়েছে। কারণ অনেক সময় সিএনজির কিছু অসাধু চালকরাও অপহরণকারিদের ইনফরমার হিসেবে কাজ করে। কক্সবাজার সদর থানা ও রামু থানার পুলিশ এবং কমিউনিটি পুলিশের সহযোহগিতায় অপহৃতদের উদ্ধারে গহীন পাহাড়ে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরোজুল হক টুটুল জানান, অপহৃতদের উদ্ধারে অভিযান অব্যহত রয়েছে। অপরাধীদের ছাড় দেয়া হবে না।
উল্লেখ্য, গত ১৪ নভেম্বর রাতে ঈদগাঁও-ঈদগড় সড়কের পানের ছড়া ঢালা থেকে ঈদগড় ঠুটার বিল এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ রুবেলকে অপহরণ করে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। দুদিনের মাথায় ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তিনি ছাড়া পান। আলোচিত এ সড়কে ধারাবাহিকভাবে ডাকাতি, অপহরণ বেড়ে গেলেও অপহরণকারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। এলাকাবাসী ও যাত্রীদের প্রশ্ন আর কতলোক অপহরণ হলে এ জিম্মি দশা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে?
সায়ীদ আলমগীর/এফএ/পিআর