সরকারি খাদ্য গুদামে স্থান সংকট : বিপাকে মিলাররা


প্রকাশিত: ০৮:৩১ এএম, ০৪ জুলাই ২০১৫

চলতি বোরো মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহে নওগাঁয় সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে দেখা দিয়েছে স্থান সংকট। পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় চুক্তি করেও গুদামে চাল নিতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। এতে করে বিপাকে পড়েছেন চাল সরবরাহকারী চুক্তিবদ্ধ মিলাররা।

জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে ৩২ টাকা কেজি দরে স্থানীয় মিলারদের কাছ থেকে ৬৩ হাজার ৯৪৯ মেট্রিক টন চাল ও ২২ টাকা কেজি দরে কৃষকদের কাছ থেকে ৪ হাজার ২২৮ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষমাত্রা ঠিক করে খাদ্য বিভাগ। সে অনুয়ায়ী জেলার প্রায় ১ হাজার ২০০ মিলারের সাথে চাল সরবরাহের চুক্তিও সম্পন্ন করা হয়।

চুক্তি অনুসারে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই খাদ্য গুদামে চাল আনতে শুরু করেন মিলাররা। সে সময় গুদাম খালি থাকায় দুই সপ্তাহের মধ্যেই প্রায় ১০/১২ শতাংশ চাল সংগ্রহ সম্পন্ন হয়। কিন্তু মজুদ বাড়তে থাকায় এবং সে পরিমাণ চাল অন্যত্র না যাওয়ার কারণে অল্প দিনের মধ্যেই গুদামগুলো জায়গা সংকটের মধ্যে পড়ে।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন মিলার জানান, চুক্তি হয়েও গুদাম সংকটের মুখে পড়ে সংশ্লিষ্টরা চাল নিতে পারছেন না। ফলে দারুণ ক্ষতির মুখে পড়েছেন সরবরাহকারীরা। ব্যাংক ঋণ নিয়ে বাজার থেকে ধান কিনে এবং সেই ধান থেকে চাল উৎপাদন করে নিজস্ব গোলায় ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। আবার সরকারি গুদামে এনে পণ্য খালাসের জন্য পরিবহনগুলোকে ৩ থেকে ৪ দিন পর্যন্ত সিরিয়ালে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় শ্রমিকের মজুরি ও অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে লাভের পরিবর্তে লোকসান গুণতে হবে।

জেলা চাল কল মালিক গ্রুপের সভাপতি তৌফিকুল ইসলাম বাবু জানান, চলমান বর্ষায় ছাঁটাই করা চাল নিয়ে মিলাররা অনেকটা বিপাকেই পড়েছেন। খাদ্যগুদামে চাল দিতে গিয়ে বৃষ্টির মধ্যে পরিবহনগুলোর অধীর অপেক্ষা ও শ্রমিককে বসে রেখে মজুরি দেওয়া মিলারদের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই বিষয়টি নিরসনে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তাদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।  এ অবস্থা থেকে দ্রুত উত্তরণ ঘটানো না গেলে ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম ব্যহৃত হওয়ার আশঙ্কা করছেন মিল মালিকরা।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন জানান, নওগাঁ একটি শস্য উৎপাদন জেলা। জেলার ১১টি উপজেলায় ১৮টি সরকারি খাদ্য গুদামে ধারণ ক্ষমতার প্রায় ৩৮ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু চলতি বোরো মৌসুমের ধান ও চাল সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রায় ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অধিক হওয়ায় জায়গা সংকট দেখা দিয়েছে। তাই সরকারিভাবে চাল সংগ্রহ করার সময় এখান থেকে অভ্যন্তরীণ সূচির মাধ্যমে অন্য জেলায় শস্য স্থানান্তর প্রয়োজন হয়। ইতিমধ্যে সান্তাহার সিএসডিতে কিছু স্থানান্তর করা হয়েছে কিন্তু তা সংগ্রহের তুলনায় খুব কম। তবে গুদাম খালি করার বিষয়ে উপর মহলকে অবগত করা হয়েছে।  

তিনি আরো জানান, সরকারিভাবে ধান ও চাল সংগ্রহ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে হওয়ায় জেলায় ধান ও চালের বাজার দর স্বাভাবিক রয়েছে। এতে কৃষক ও মিলার উভয়েই এবার লাভবান হচ্ছেন।

এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।