বরিশালে অর্ধ কোটি টাকার টেন্ডার বাগিয়ে নিলো ছাত্রলীগ!
বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর ২টি গ্যাংওয়ে মেরামতের প্রায় অর্ধ কোটি টাকার টেন্ডার বাগিয়ে নিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
বুধবার দরপত্র জমা দেয়ার শেষ দিনে দিনভর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বাঁধার কারণে আগ্রহী কোনো ঠিকাদারই অফিসের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে (নির্দিষ্ট বিটমানি উঠিয়ে) কাজ দুটি বাগিয়ে নেন ছাত্রলীগের টেন্ডারবাজরা।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, শরীয়তপুর এবং বরিশালের মুলাদীতে যথাক্রমে ২৫ ও ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে গ্যাংওয়ে মেরামতের জন্য গত মাসের প্রথম দিকে দরপত্র আহ্বান করে বিআইডব্লিউটিএ। সে অনুযায়ী আগ্রহী ঠিকাদাররা দরপত্র কিনে পে-অর্ডারসহ যাবতীয় কাগজপত্র নিয়ে বুধবার বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় ‘হিমনীড়ে’ যান। কিন্তু ‘হিমনীড়ে’ প্রবেশের সময় আগ্রহী ঠিকাদারদের বাঁধা দেয় মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি জসিমউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক অসীম দেওয়ান এবং তাদের সহযোগীরা। নিরুপায় হয়ে ঠিকাদাররা দরপত্র জমা না দিয়েই ফিরে যান বলে জানান অনেকে।
এসময় কোনো কোনো ঠিকাদার মুঠোফোনে দরপত্র জমা দিতে বাঁধা দেয়ার বিষয়টি নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানান। কেউ আবার র্যাব উপস্থিত না রাখায় এর কারণ জানতে চান। কিন্তু অভিযোগ শোনার পরও নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহনেওয়াজ আগ্রহী ঠিকাদারদের দরপত্র জমা দেয়ার কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার।
ছাত্রলীগের এক নেতা নাম না প্রকাশের শর্তে জাগো নিউজকে জানান, কাজ দুটি ছাত্রলীগের কেউ নেননি। মোটা অঙ্কের কমিশন নিয়ে ওই দুটি লঞ্চ ঘাটের কাজ দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে ভাগ-বণ্টন করে দিয়েছে ছাত্রলীগ নেতারা।
দরপত্র জমা দিতে বাঁধা দেয়ার সময় নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতরে থাকা পুলিশ সদস্যরাও নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিলেন বলে জানিয়েছেন সাধারণ ঠিকাদাররা।
ওই দফতরে দায়িত্বরত কোতয়ালী থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহমান মুকুল জাগো নিউজকে জানান, নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতরের মধ্যে কোনো ঠিকাদারকে বাঁধা দেয়ার ঘটনা ঘটেনি। বাইরে কিছু হয়ে থাকলেও তিনি তা জানেন না।
বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহনেওয়াজ জাগো নিউজকে জানান, সাধারণ ঠিকাদারদের দরপত্র জমা দিতে বাঁধা দেয়ার খবর তিনি জানেন না। কেউ কোনো অভিযোগও করেননি। ওই দুটি কাজের বিপরীতে ৪০টি দরপত্র বিক্রি হলেও জমা পড়েছে মাত্র ৬টি।
এ প্রসঙ্গে মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিন জাগো নিউজকে জানান, কোনো ঠিকাদারকে বাঁধা দেয়া হয়নি। বরং সকলের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে দুই জনকে কাজ দুটি দেয়া হয়েছে।
সাইফ আমীন/এমজেড/পিআর