ভোলাসহ উপকূলে জাটকা ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ
ভোলাসহ উপকূলের ৭ জেলায় মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে ৯ ইঞ্চির ছোট জাটকা ইলিশ ধরার ৭ মাসের নিষেধাজ্ঞা আইন মঙ্গলবার রাত ১২টায় শেষ হয়েছে। নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত এ আইন আরোপ ছিল।
ইলিশের বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করতে সরকার উপকূলের মেঘনা, তেঁতুলিয়াসহ সাগর মোহনার মাছ ধরায় এ আইন আরোপ করলেও প্রভাবশালী দাদন ব্যবসায়ীদের কারণে কিছু জেলে জাটকা ইলিশ ধরেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি ভোলার কাচিয়া, মদনপুর, দৌলতখানের সৈয়দপুর, বোরহানউদ্দিনের হাকিমুদ্দিন, তজুমদ্দিনের মহেশখালী, চর জহিরউদ্দিন, মনপুরার কাটাখালী, হাজিরহাট, কলাতলি, মাঝের ডুবো চরে প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার জাটকা ধরে থাকে।
এদের দু` একজন ধরা পড়লেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রভাবশালীরা থেকে গেছেন অধরা। ফলে সাধারণ জেলেরা জাটকা ধরা থেকে বিরত থাকলেও প্রভাবশালীরা আইনের তোয়াক্কা করে না বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে সাধারণ জেলেদের মধ্যে ক্ষোভও বিরাজ করছে।
জেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ৭ মাসে ৬২৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল, জরিমানা করা হয়। আবার জাটকা নিধন বন্ধের নামে চাঁদাবাজিরও অভিযোগ রয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রীতিষ কুমার মল্লিক জানান, আগে ৩১ মে পর্যন্ত আইনটি ছিল। এবার ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। জুন মাসের পর জাটকা ইলিশ আর থাকে না। ওই সময় ৯ ইঞ্চির ছোট আকারের ইলিশের পেটেও ডিম চলে আসে। ওই মাছ আর বাড়ে না।
সরেজমিনে বাজারে ওই ইলিশ বিক্রি করতে দেখা গেছে। অপরদিকে ৮ / ৯ গ্রামের ইলিশ এক হালি বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার টাকা দরে। আবার এক কেজির ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১৮শ থেকে ২ হাজার টাকা দরে। টানা বৃষ্টি হলেও ঝাঁকের ইলিশ মেলে নি। এতে শুধু ভোলা জেলায় ৭৮ হাজার জেলে পরিবারে দুর্দিন চলছে। কিছু মাছ পাওয়া গেলেও তা ঢাকাসহ অন্যত্র নিয়ে যাওয়ায় ভোলার বাজারে মাছের আকাল অব্যাহত রয়েছে। ফলে ইলিশ ছাড়া অন্যান্য মাছের দামও আকাশ ছোঁয়া।
মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, নভেম্বর মাস থেকে জুন মাস পর্যন্ত জাটকা ধরার নিষেধাজ্ঞা ছাড়াও মার্চ-এপ্রিল দু`মাস ৩২০ কিলোমিটার নদী এলাকায় সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। এছাড়া ইলিশের ডিম ছাড়ার জন্য বছরের আশ্বির্ন মাসের প্রথম পূর্ণিমার জোঁ ধরে ১১ দিন মাছ ধরা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে। ফলে উপকূলের জেলেরা নির্বিঘ্নে মাছ ধরতে পারে মাত্র ৩ মাস।
সূত্র জানায়, জাটকা ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও কারেন্টজাল, বেহুন্দী জাল, পেটানো জাল, বেড় জাল দিয়ে মাছ ধরা নিষিদ্ধ রয়েছে। এ জাল ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান মৎস্য কর্মকর্তা।
অমিতাভ অপু/এসএস/এমএস