হোমিও খেয়ে সাহেব আলীর মরণ দশা
২৫ বছর আগে মুখের মধ্যে ঘামাচির মতো উঠেছিল। এসব দেখে এলাকার লোকজন পরামর্শ দিয়েছিল হোমিও ওষুধ খেলে ঠিক হয়ে যাবে। মুরুব্বিদের পরামর্শ শুনে স্থানীয় বাজারে হোমিও ডাক্তারে কাছে গিয়েছিলাম। তিনি মুখের ওইসব ঘামাচির মতো দেখে বলেছিলেন দুইমাস নিয়মিত ওষুধ খেলে পুরোপুরি ঠিক হয়ে যাবে। ডাক্তারের কথা মতো দুইমাস ওষুধ খাবার পর বাড়তে বাড়তে আজ গুটি গুটিতে পরিণত হয়েছে। এখন চোখ দুটো বাদ দিয়ে পুরো মুখমণ্ডল ও মাথাজুড়ে গুটি গুটি টিউমারে ভরপুর।
শুক্রবার সন্ধ্যায় জাগো নিউজ কার্যালয়ে এসে এভাবেই অসুখের বর্ণনা করছিলেন ৫২ বছর বয়সী মোহাম্মদ সাহেব আলী। বর্তমানে তিনি আগারগাঁওয়ে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের নিমার্ণাধীন ভবনের শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। তার বাড়ি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়নের বারইখালি গ্রামে।
সাহেব আলী জানান, একই রোগে তার বড় ভাই আবেদ আলী, বোন আবিরন ও আকিরন আক্রান্ত। তবে তুলনামূলকভাবে তাদের শরীরে গুটি গুটি এসব টিউমারের সংখ্যা কম। তারাও হোমিও খেয়েছিল।
তিনি জানান, অনেকে বলেছে এটা বংশগত রোগ। কিন্তু আমাদের চার ভাই-বোন ছাড়া বাবা-নানার বংশের কারই এই রোগ ছিল না। আমাদের সন্তানদেরও হয়নি। তারা ভালো আছে।
সাহেব আলী জানান, হোমিও খাবার পরপরই যখন গুটিগুলো বড় হতে শুরু করল, তখন (২৫ বছর আগে) কুষ্টিয়ায় আশরাফুল নামে একজন ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম। তিনি সব কিছু পরীক্ষা নিরিক্ষা করে বলেছিল এই রোগের নাম নিউরোফাইব্রোম্যাটোসিস (Neurofibromatosi)। এ রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। বিদেশেও নেই। অপারেশন করে কিছুদিন সুস্থ থাকলেও পরে আবারও হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ কথা শুনে গত ২০ বছরে আর কোনো ডাক্তারের কাছে যাইনি। এগুলোর ব্যথা নেই, কিন্তু মুখমণ্ডল ভারি হয়ে আছে। এখন খুব অসহ্য লাগছে।
তিনি জানান, সম্প্রতি শুনেছি অপারেশন করলে কিছুটা ভালো হচ্ছে। কিন্তু অপারেশন করতে কিছু টাকা পয়সা খরচ হচ্ছে। আমি নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করে যা পাই তা দিয়ে কোনো মতে আমার ও বাড়িতে ছেলে-মেয়েরা খেতে পারে। কিন্তু চিকিৎসা করানোর মতো টাকা নেই।
অসহায় সাহেব আলী জানান, ঢাকা মেডিকেলে নাকি এই রোগের অপারেশন হয়। এজন্য ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়। কেউ যদি এটুকু সাহায্য করতো, মৃত্যুর আগে একবার সুস্থ হওয়ার চেষ্টা করতাম।
সাহেব আলীকে পাওয়া যাবে ০১৯৫৪৭৫৬৬৯৯ নম্বরে।
এমএএস/এমএস