নারায়ণগঞ্জে অপহৃত স্কুলছাত্র হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় জোবায়ের হোসেন (১৩) নামের স্কুলছাত্রকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। বাসা থেকে টাকা চুরির ঘটনা জেনে ফেলায় বিষয়টি ধামাচাপা দিতেই জোবায়েরকে অপহরণের পর হাত পা বেঁধে একটি ড্রেনে ফেলে দেয় তারই প্রাইভেট শিক্ষক।
সোমবার দুপুরে স্থানীয় এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লিটনসহ স্থানীয় লোকজন জোবায়েরকে উদ্ধার করে।
জোবায়ের হোসেন ফতুল্লার শাসনগাঁও এলাকার শাহী মসজিদ সংলগ্ন আসলাম মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া নাসির হোসেনের ছেলে। সে ফতুল্লার মুসলিমনগর কে এম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। স্কুলছাত্র জোবায়ের হোসেনের বাবা নাসির হোসেন চা বিক্রেতা ও মা জিয়াসমিন আক্তার স্থানীয় একটি গার্মেন্টের শ্রমিক।
পরিবারের উপস্থিতিতে উদ্ধারকৃত স্কুলছাত্র জোবায়ের হোসেন জাগো নিউজকে জানান, তাকে প্রাইভেট পড়ায় মামুনুর রশিদ। মামুনুর রশিদ ফতুল্লার বিসিক শিল্প নগরীর করণী গ্রুপের অবন্তি কালার গার্মেন্ট এ প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। গত ১৫ দিন আগে জোবায়েরের বাসায় প্রাইভেট পড়াতে যায় মামুনুর রশিদ। ওই সময়ে বাড়িতে নাসিরের বাড়িতে কেউ ছিল না। বাড়িতে আলমারিতে থাকা টাকার বান্ডেল দেখতে পেয়ে জোবায়েরকে রুটি কিনার কথা বলে বাইরে পাঠায় মামুনুর রশিদ। এসময় রুটি নিয়ে জোবায়ের শিক্ষকের টাকা চুরির ঘটনা দেখে ফেলে। পরে তাকে হুমকি দিয়ে টাকা নিয়ে সে রাতে চলে যায়। তবে পরে বিষয়টি মামুনুর রশিদ বিষয়টি প্রকাশ না করতে উল্টো জোবায়েরকে ৫ হাজার টাকা প্রদান করার চেষ্টা করে।
রোববার সকালে ৩১ হাজার টাকা চুরির ঘটনার বিষয়ে জোবায়ের বাসার সবাইকে অবগত করলে স্থানীয় ভাবে বিচার দিলে ওই শিক্ষককে ডেকে এনে বিষয়টি অবগত করলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।
এই ঘটনার জের ধরে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় জোবায়েরকে রাস্তায় একা পেয়ে প্রাইভেটকার যোগে আসা শিক্ষকসহ আরো দুইজন জোবায়েরের মুখ চেপে গাড়িতে তুলে নিয়ে অপহরণ করে। পরে তাকে পঞ্চবটি হরিহরপাড়ায় সাইকেল কারখানার পেছনে নিয়ে হাত পা বেঁধে একটি বাড়ির ড্রেনের নিচে ফেলে রাখে। পরে তাকে স্থানীয় লোকজন হাত পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে।
ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের এসআই মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে অবন্তি কালার গার্মেন্টে গিয়েছিলাম। পরে কর্তৃপক্ষ সিসি ক্যামেরা দেখায় এবং বলে তিনি কারখানা হতে বের হয়নি। আর কারখানায় ৪টি সিসি ক্যামরার ২টি দেখাচ্ছে আর ২টি দেখাতে পারেনি। পরে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে এডমিন যদি জড়িত থাকে তাহলে পুলিশের হাত তুলে দিবে।
এদিকে শিক্ষক কর্তৃক স্কুলছাত্র অপহরণের ঘটনায় ফতুল্লায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় এবং অবন্তি কালার গার্মেন্টের এডমিন মামুনুর উর রশিদকে গ্রেফতার করে কঠিন শাস্তির দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী ও পরিবারের লোকজন।
শাহাদাৎ হোসেন/এমএএস/আরআই