গাইবান্ধায় নদী ভাঙনে বিপর্যস্ত মানুষ
টানা বর্ষণে তিস্তা, ঘাঘট, করতোয়া, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়তে শুরু করায় গাইবান্ধায় নদী ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। পানির প্রবল চাপে বিশেষ করে জেলার ফুলছড়ি উপজেলার ২০টি পয়েন্টে নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। আতঙ্কিত মানুষ পানি উন্নয়ন বোর্ড আর জনপ্রতিনিধিদের কাছে সহায়সম্বল রক্ষায় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানালেও অল্প কিছু এলাকায় কাজ করছে পাউবো।
এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিরা জানান, নদীগুলোতে এখন স্রোতের তীব্রতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীতে ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর ইউনিয়নের চন্দনস্বর, উত্তর খাটিয়ামারী, পূর্ব খাটিয়ামারী, পশ্চিম খাটিয়ামারী, কুচখালী, কাউয়াবাঁধা গ্রাম জুড়েই ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। একই উপজেলার উদাখালী ইউনিয়নের সিংড়িয়া, উড়িয়ার রতনপুর, কালাসোনা, গজারিয়ার কামারপাড়া, জিয়াডাঙ্গা, কঞ্চিপাড়ার রসুলপুর, পূর্ব কঞ্চিপাড়া, জোড়াবাড়ি, সাতারকান্দি, ফজলুপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর ও খাটিয়ামারী গ্রামেও নদী ভাঙন অব্যাহত আছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের একাধিক সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহে ফুলছড়ির গোবিন্দি, গণকবর ও নামাপাড়া এলাকায় নদী ৫০ থেকে ৭৫ ফিট ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েছে। একপক্ষকালে নদী তীরবর্তী অন্তত দেড়শতাধিক বাড়ি, প্রচুর আবাদি জমি, গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। উপসহকারী প্রকৌশলী চন্দ্র শেখর দাস বলেন, তীব্র ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড এসব এলাকায় কাজ করে চলেছে।
এদিকে নদী ভাঙন অব্যাহত থাকায় গৃহহীন পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন শতশত পরিবার, স্কুল, আদর্শ (গুচ্ছ) গ্রাম, গো-হাট, বেসরকারি সংস্থাসহ অনেক স্থাপনা। তাদের একমাত্র ভরসা অন্যের বাড়িতে আশ্রয় অথবা ওয়াপদা বাঁধে।
ফুলছড়ি উপজেলার চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড সময়মতো শুকনো মৌসুমে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে নদী ভাঙন থেকে বিস্তীর্ণ এলাকা রক্ষা করা যেত।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাইবান্ধা নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আউয়াল জাগো নিউজকে জানান, সিংড়িয়া রক্ষায় ৫ কোটি টাকার টেন্ডার করা হয়েছে। ভাঙনপ্রবণ বেশ কিছু এলাকায় কাজ চলছে। অন্য এলাকাগুলোতেও সতর্ক পর্যবেক্ষণ রয়েছে।
অমিত দাশ/এমজেড/আরআই