দখল আর দূষণে মৃতপ্রায় কর্ণফুলী


প্রকাশিত: ০৬:১৩ এএম, ২৭ জুন ২০১৫
ফাইল ছবি

দখল আর দূষণে মৃতপ্রায় কর্ণফুলী নদী। নদীর বিভিন্ন স্পটে ১৪১টি কারখানার বর্জে দূষিত হচ্ছে খরস্রোতা এ নদী। এছাড়া নদীর দুই পাড়ে সরকারি-বেসরকারি আড়াই হাজার স্থাপনায় দখল হয়ে গেছে নগীর সিংহভাগ।  

নদীর দুই তীরে গড়ে ওঠা এসব স্থাপনা দখলের পাশাপাশি দূষিত করছে নদীকে। সম্প্রতি উচ্চ আদালতের নির্দেশে নদীর প্রকৃত সীমানা নির্ধারণ করতে গিয়ে এসব অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করেছেন জেলা প্রশাসন।

দখল আর দূষণে নদী প্রতিনিয়ত হারাচ্ছে তার নাব্যতা ও প্রশস্ততা। নগরীর বিভিন্ন খাল দিয়ে আবর্জনাগুলো নদীতে পড়ার কারণে দিন দিন বাড়ছে নদীপৃষ্ঠের উচ্চতা। ফলে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে নগরীর নিম্নাঞ্চল। বাড়ছে জলাবদ্ধতার মতো দুর্ভোগের ঘটনা।

খরস্রোতা এ নদীর মোহনাতে অবস্থিত দেশের অর্থনীতির স্বর্ণদ্বার খ্যাত চট্টগ্রাম বন্দর। অব্যাহত দখলের ফলে হুমকির মুখে বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

নদী দখল আর দূষন বন্ধে বার বার দাবি জানিয়ে আসছেন পরিবেশ আন্দোলন কর্মীরা। কিন্তু তাদের সেই দাবির প্রতি কারো তোয়াক্কা নেই।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন জাগো নিউজকে জানান, নদীর মোহনা থেকে উপরের মোহনা পর্যন্ত দুই তীরে ১০ কিলোমিটার এলাকার সীমানা নির্ধারণে কাজ চলছে। সীমানা নির্ধারণী কাজে নেমেইে ধরা পড়ে দুই তীরের প্রায় আড়াই হাজার অবৈধ স্থাপনা। যার মধ্যে রয়েছে বড় বড় শিল্প কারখানাও।

২০১০ সালের ১৮ জুলাই হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে এক রিট আবেদনে হাইকোর্ট কর্ণফুলী নদী দখল, মাটি ভরাট ও নদীতে সব ধরনের স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে ৬ মাসের মধ্যে সীমানা নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

মেজবাহ উদ্দিন জানান, এ মাসের শেষের দিকে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। নগরীর লালদিয়ার চর, শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন চাক্তাই, সদরঘাট এলাকার অংশে অবৈধ স্থাপনা বেশি। আর এর পেছনে রয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা।

সরেজমিনে নদীর ওইসব অংশে গিয়ে বাস্তবে অবৈধভাবে দখল ও দূষণের চিত্র দেখা যায়। তীর ভরাট করে টিনশেড ঘর, পাকা দালান এবং কারখানাও গড়ে তোলা হয়েছে। এমনকি বেশ কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানের স্থাপনাও গড়ে তোলা হয়েছে নদী দখল করে।

এর আগে ২০১০ সালে পরিবেশ অধিদফতরের এক জরিপে নদী তীরে গড়ে ওঠা ১৪১টি ছোট বড় কারখানাকে কর্ণফুলী দূষণের জন্য দায়ী করা হয়েছিল। তখন ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নগরবাসীর ব্যবহৃত বর্জ্য খালের মাধ্যমে সরাসরি নদীতে গিয়ে পানি দূষণ করছে। এতে নদীর জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়ছে।

পরিবেশ আন্দোলন পিপলস ভয়েসের সভাপতি শরীফ চৌহান জাগো নিউজকে বলেন, দেশের স্বার্থে, চট্টগ্রাম বন্দরের স্বার্থে কর্ণফুলীর দূষণ-দখল বন্ধে প্রশাসনকে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।  

এমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।