সন্তান পেটে রেখেই সিজার সমাপ্ত, হাসপাতালে সিলগালা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা
প্রকাশিত: ১২:৪৩ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০১৭

প্রসূতির পেটে একটি সন্তান রেখে টিউমার ভেবে সিজারিয়ান সম্পন্ন করা কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দির বিতর্কিত সেই লাইফ হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।

সরকারি অনুমোদন না থাকায় এবং চিকিৎসা অবেহলার অভিযোগে বুধবার দুপুরে হাসপাতালটি সিলগালা করে দেয় উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসনের উদ্যোগে গঠিত ভ্রাম্যমাণ আদালত। বুধবার জাগো নিউজসহ বিভিন্ন গণমাধমে এই খবর প্রকাশিত হলে টনক নড়ে স্বাস্থ্য বিভাগের।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর জেলার হোমনা উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের আউয়াল হোসেনের স্ত্রী খাদিজা আক্তারকে (২২) দাউদকান্দির গৌরীপুর লাইফ হসপিাটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়।

অপারেশনে অংশ নেন- দাউদকান্দির বিটেশ্বর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে প্রেষণে থাকা মালিগাঁও ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. শেখ হোসনে আরা। ওই অপরারেশনে এনেসথেসিয়া প্রয়োগ করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মঞ্জুরুল আলম।

খাদিজা আক্তারের মা আমেনা বেগম জানান, তার মেয়ের গর্ভে ২টি সন্তান থাকলেও সিজারিয়ান অপারেশন করে ১টি সন্তান বাইর করে অপরটি টিউমার বলে সিজারিয়ান কার্যক্রম সমাপ্ত করেন ডা. শেখ হোসনে আরাসহ অপারেশন থিয়েটারে থাকা অন্যান্যরা।

পরবর্তীতে তার মেয়ে খাদিজা বাড়িতে যাওয়ার পর দীর্ঘ এক মাস তার পেটে ব্যথা ছিল। এ নিয়ে চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে যান। এ সময় তার পেটে অনেক ব্যথা ছিল।

গত ৫/৬ দিন আগে ওই প্রতারিত প্রসূতি মা হোমনা উপজেলা সদরের একটি ক্লিনিকে আলট্রাসনোগ্রাফি করার পর জানতে পারেন তার পেটে টিউমার নয় আরও একটি মৃত সন্তান রয়েছে।

Comilla-hospital

অভিযোগ পেয়ে এ ঘটনা তদন্তে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। বুধবার অবৈধভাবে চলা ওই প্রাইভেট হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানো হয়।

এতে অংশ নেন- দাউদকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অরবিন্দ বিশ্বাস, দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. জালাল হোসেন, আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. শাহীনুর আলম সুমন।

এ বিষয়ে ডা. শেখ হোসনে আরা বলেন, যা বলার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাই বলবেন। এ বিষয়ে আমার কিছুই বলার নেই।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জালাল হোসেন জানান, এরই মধ্যে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় ডা. হোসেনে আরাকে শোকজ এবং ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকারি অনুমোদন না থাকায় ওই হাসপাতালটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মো. কামাল উদ্দিন/এএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।