দুদকের মামলায় সাবেক এমপির ১০ বছর কারাদণ্ড

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি যশোর
প্রকাশিত: ০৬:১৫ এএম, ২৫ অক্টোবর ২০১৭

দুদকের মামলায় ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মসিউর রহমানকে ১০ বছর কারাদণ্ড ও ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একইসঙ্গে অবৈধভাবে অর্জিত ১০ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩৩০ টাকার সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার যশোরের স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা এ রায় দেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) যশোরের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মসিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলার দুটি ধারায় কারাদণ্ড, জরিমানা ও অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এরমধ্যে ২৬ (২) ধারায় তথ্য গোপনের অভিযোগে তিন বছরের কারাদণ্ডে ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদণ্ড এবং ২৭ (১) ধারায় ৭ বছরের কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড। এছাড়াও ১০ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩৩০ টাকার সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গত ১৬ অক্টোবর মামলাটির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ২৫ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন আদালত।

মামলার নথিসূত্রে জানা যায়, জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন প্রায় ১০ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩৩০ টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে ২০০৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়ার তৎকালীন সহকারী পরিচালক মোশারফ হোসেন মৃধা মামলা দায়ের করেন। ২০০৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মামলাটি তদন্ত শেষে মো. মসিউর রহমানকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখির করেন তদন্ত কর্মকর্তা ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে যশোরের উপ-পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন।

২০০৯ সালের শেষের দিকে ঝিনাইদহ সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত মামলাটি আমলে নেন। আমলযোগ্য মামলাটির বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে প্রসিডিং কোয়াসমেন্টের জন্য আবেদন করেন মো. মসিউর রহমান। এরপর ২০১০ সালের ৬ জুন উচ্চ আদালত মামলাটির পরবর্তী কার্যক্রম স্থগিত করেন। যার নম্বর ক্রিমিনাল মিসকেস নম্বর ১৬৬/৭১/২০১০।

চার বছর পর ২০১৪ সালের ১৭ এপ্রিল উচ্চ আদালত আসামির মকদ্দমা খারিজ করে স্থগিতাদেশ বাতিল করেন। একই সঙ্গে স্পেশাল জজ আদালত যশোরকে মামলার কার্যক্রম আইন অনুযায়ী পরিচালনার নির্দেশ দেন। এরপর আসামি পক্ষের বিভিন্ন সময়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু হয়। অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে লিভ টু আপিল (যারা নম্বর ৩৩২/১৪) দাখিল করেন আসামি।

পরবর্তীতে লিভ টু আপিল খারিজ হয়ে গেলে পুনরায় সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন ৭৪/১৫ দাখিল করেন। রিভিউ পিটিশন খারিজ হলে বিচার কাজ শুরু হয়। পুনরায় আয়কর আইনের বিরুদ্ধে ৪৩৩৭/১৬ রিট পিটিশন দাখিল করেছেন উচ্চ আদালতে। সেখানে এই মামলার বিষয়টিও অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে।

এদিকে, ১৬ অক্টোবর আদালতে দুই পক্ষের আইনজীবীর যুক্তি তর্ক উপস্থাপন সম্পন্ন হয়। এরপর আদালত নির্ধারিত দিনে (২৫ অক্টোবর) মামলার রায় ঘোষিত হলো। রায় ঘোষণার পর আদালত সাবেক সংসদ সদস্য মসিউর রহমানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

মিলন রহমান/এফএ/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।