রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ২৪ জন এইডস রোগী
উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মাঝে এইচআইভি পজেটিভ রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এতে বাড়ছে উদ্বেগও। ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত এইডস রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৪ জনে এসে দাঁড়িয়েছে। এদের মাঝে একজন মারা গেলেও বাকিরা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
যে কজন পরীক্ষার জন্য এসেছেন বা আগে থেকে শনাক্ত ছিলেন তারা ছাড়াও বিশাল জনগোষ্ঠীর মাঝে আরো এইডস রোগী থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. আবদুস সালাম।
মঙ্গলবার বিকেলে কলেরা টিকার বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। তবে আরো এইচআইভি পজেটিভ রোগী আছে কি না সেটা নির্ণয় করতে শিগগিরই একটি পরীক্ষা চালানো হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ২৪ জন এইচআইভি পজেটিভ রোগী পাওয়া গেছে। যাদের ২২ জন মিয়ানমারে থাকাকালীন শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত করে আসেন। আর বাংলাদেশে এসে ২ জনের মাঝে এ ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। সবাইকে বিশেষ ভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এদের মাঝে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
তিনি আরো বলেন, এভাবে এইডস রোগী পাওয়া আমাদের জন্য অতি উদ্বেগের বিষয়। তবে একসাথে খাবার খাওয়া, ঘুমানো বা স্বাভাবিক মেলামেশায় এইডস ছড়ায় না। শুধুমাত্র শারিরীক মিলন ও আক্রান্ত রোগীর রক্ত ব্যবহারের মাধ্যমে রোগটি ছড়ায়। তাই রোহিঙ্গা নারীদের ব্যবহারে সতর্ক হতে অনুরোধ জানান তিনি। পাশাপাশি এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো গেলে শঙ্কা অনেকাংশে কমে যায় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুস সালাম আরো জানান, আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের মাঝে এখন পর্যন্ত ৭ হাজার গর্ভবতী নারীকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। জন্ম নিয়েছে ৬৫৩ জন শিশু। পাওয়া গেছে ৮ জন ম্যালেরিয়া রোগী। ৬ লাখ ৭৯ হাজার লোককে কলেরার ভেকসিন খাওয়ানো হয়েছে। ১৬ হাজার ৮৩৩ জন এতিম শিশুর সন্ধান পাওয়া গেছে।
উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও রোগ প্রতিষেধক টিকা কার্যক্রমের সমন্বয়কারী ডা. মিসবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, মিয়ানমার নাগরিকরা প্রাণভয়ে বাংলাদেশে আসছে ঠিকই কিন্তু সেই সঙ্গে তারা নিয়ে আসছে মারাত্মক সব সংক্রামক রোগ। ইতোমধ্যে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে বিভিন্ন ক্যাম্পে। অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অপুষ্টিজনিত কারণে রোহিঙ্গারা সহজেই এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ জন্যই সরকারিভাবে রোহিঙ্গাদের কলেরা টিকা খাওয়ানোর কার্যক্রম চলছে।
সায়ীদ আলমগীর/এফএ/আইআই