‘ব্লু হোয়েল’ আসক্ত টাঙ্গাইলের তরুণকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ০৪:২৪ পিএম, ১৩ অক্টোবর ২০১৭

অনলাইন সুইসাইড গেম ‘ব্লু হোয়েল’-এ আসক্ত টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার তরুণ হৃদয়কে (২০) জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যায় হৃদয়ের এই বিপজ্জনক গেমে জড়িয়ে পড়ার সংবাদ পেয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গোপালপুর থানায় নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন।

হৃদয় উপজেলার আলমনগর বয়ড়াপাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী আমজাদ আলীর ছেলে। তিনি গাজীপুরে একটি পেপার মিলে চাকরি করেন।

ওসি হাসান আল মামুন জানান, আলোচিত এই ‘ব্লু হোয়েল’ গেমটি খেলার বিষয়টি হৃদয় স্বীকার করেছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে হৃদয়ের পরিবারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি।

হৃদয়ের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঢাকার গাজীপুরে একটি পেপার মিলে চাকরি করেন হৃদয়। সম্প্রতি মোবাইলে ‘ব্লু হোয়েল’ গেম খেলায় আসক্ত হয়ে পড়েন তিনি। একপর্যায়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে গত ১১ অক্টোবর তার ফেসবুকে হাতে ব্লেড দিয়ে কেটে আঁকা তিমি মাছের একটি ছবি পোস্ট করেন। ছবিটি ফেসবুকের মাধ্যমে হৃদয়ের মামা সৌদি প্রবাসী কবির হোসেনের নজরে আসে। কবির বিষয়টি তাৎক্ষণিক সৌদি থেকে তার স্বজনদের জানালে আতঙ্কিত হয়ে পরিবারের লোকজন গত বুধবার রাতে হৃদয়কে গাজীপুর থেকে বাড়িতে নিয়ে আসে।

হৃদয় বলেন, গত ২০ সেপ্টেম্বর মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট অন করার সঙ্গে সঙ্গে স্ক্রিনে একটা অ্যাপস্ ভাসতে থাকে। ব্লু হোয়েল সম্পর্কে আমি শুনেছি। তারপরও কৌতুহল বসত আ্যাপটি ওপেন করি। এরপর একটা কল আসে আমি রিসিভ করলে একজন অ্যাডমিনের নির্দেশে শুরু হয় গেম খেলা। আস্তে আস্তে বেশ কিছু মজার মজার ধাপ খেলতে খেলতে আসে চ্যালেঞ্জিং পর্ব।

তবে ২০ দিন যাবৎ গেমটির কত পর্ব খেলেছে বা কী কী কাজ করেছে এমন প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট কোনো জবাব দিতে পারেন নি হৃদয়।

তিনি আরও বলেন, আমার তেমন কিছু মনে নেই, তবে গেমটি খেলতে খেলতে আমার হাতে তিমি মাছের ছবি আঁকতে বলা হয়েছিল। আমার হাত কেটে কীভাবে ছবি এঁকেছি আমি জানি না। রাতে কী করছি আমার কিছুই মনে পড়ছিল না।

হৃদয়ের নানা আব্দুল হামিদ বলেন, আমরা হৃদয়কে নিয়ে ভীষণ চিন্তিত। তার মোবাইলসহ সিমকার্ড বন্ধ রাখা হয়েছে। এইসব প্রাণঘাতী গেম যেন কোনো ছেলে-মেয়ের হাতে পৌঁছাতে না পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।

হৃদয়ের মা হাজেরা বেগম বলেন, এমন মরণ খেলা যেন কোনো সন্তানের কাছে না আসে। হৃদয়কে পারিবারিকভাবে কড়া নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তার শারিরিক ও মানসিক অবস্থা এখন শঙ্কামুক্ত।

আরিফ উর রহমান টগর/আরএআর/আরএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।