রাঙামাটিতে ৬ মাসে ২৪ নারী যৌন নির্যাতনের শিকার


প্রকাশিত: ০৯:১০ এএম, ১৬ জুন ২০১৫
প্রতীকী ছবি

পার্বত্য চট্টগ্রামে গত ৬ মাসের ব্যবধানে ২৪ নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।  যাদের মধ্যে রয়েছেন ২১ আদিবাসী ও ৩ বাঙালি নারী।  ২০১৪ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ওইসব নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হন।  ‘পুগোবেল’ নামে রাঙ্গামাটির স্থানীয় একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিচালিত জরিপ রিপোর্টে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ডায়না চাকমা জাগো নিউজকে বলেন, ভিকটিমসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সরাসরি কথা বলে এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে পাওয়া প্রকৃত তথ্যের ভিত্তিতে ওই রিপোর্টটি তৈরি করা হয়।  যেটি সোমবার রাঙ্গামাটি শহরের আশিকা হলে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময়ে স্থানীয় গণমাধ্যম ও সমাজকর্মীদের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়েছে।

রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই সময়ের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণ ৬, গণধর্ষণ ৪, ধর্ষণের পর হত্যা ১, শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ২ এবং ১১ নারী ধর্ষণের চেষ্টার শিকার হয়েছেন।  যৌন নির্যাতনের শিকার ভিকটিমদের মধ্যে ১০-১১ বছরের শিশু, প্রতিবন্ধী, গর্ভবতী ও গৃহবধূ নারীও রয়েছেন।

বিপরীতে অভিযুক্ত যৌন নির্যাতনকারীদের মধ্যে রয়েছেন বাঙালি ৩০, আদিবাসী ৫, আইনশৃংখলা বাহিনীর ২ এবং পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি এমন ৭ ব্যক্তি।  

রিপোর্টে আরো বলা হয়, যেখানে বাংলাদেশের বেশিরভাগ নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন সেখানে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী নারীদের অবস্থা আরো শোচনিয়।  তারা ঘরে এবং বাইরে সব জায়গায় শারীরিক এবং যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।  বহুল আলোচিত কল্পনা চাকমার অপহরণ মামলা থেকে শুরু করে পরবর্তীতে সংঘটিত সবিতা চাকমা, সুজাতা চাকমা, বিশাখা চাকমা, ছবি মারমা ও তুইমাচিং মারমার মতো অনেক আদিবাসী নারী যৌন নির্যাতনের পর হত্যার শিকার হয়েছেন।  

ওইসব ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা আজো তদন্তাধীন অবস্থায়।  ফলে ওইসব মামলার দীর্ঘসূত্রতা, আইনি প্রক্রিয়ার জটিলতা এবং আসামিদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি না হওয়া পার্বত্য চট্টগ্রামে নারীর প্রতি সহিংসতা ও যৌন নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার মূল কারণ।

রিপোর্টে ৩ পার্বত্য জেলায় মেডিকেল টেস্ট সম্পন্ন করতে ফরেনসিক বিভাগ এবং খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায় ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার স্থাপন,
অভিযুক্তদের আইনের আওতায় নিয়ে গিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত ও মামলার বাদী বা অভিযোগকারী এবং সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, ধর্ষণ ও মারাত্মক যৌন নির্যাতনের ঘটনা আদিবাসীদের প্রথাগত আইনে নিষ্পত্তি না করে ফৌজদারি আইনের আওতায় আনাসহ সরকারের কাছে ১২ সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।

সুশীল প্রসাদ চাকমা/এমজেড/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।