বেলকুচিতে ৪ দিনের ব্যবধানে ২ জনের মরদেহ উদ্ধার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১১:০৩ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে চারদিনের ব্যবধানে আরিফুল ইসলাম (১৩) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্র ও মনতোষ কুমার সরকার (২৮) নামে এক যুবককে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করেছে। এ দুটি ঘটনার পর থেকেই অপহরণ আতঙ্কে ভুগছে বেলকুচি উপজেলার সাধারণ মানুষ।

অপহরণের দুদিন পর বুধবার ভোরে পুলিশ উপজেলার বিশ্বাসবাড়ি গ্রামে হুড়াসাগর নদীর ব্রিজের নিচে কচুরিপানার ভেতর থেকে মনতোষ কুমার সরকারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এর আগে সোমবার সকালে বেলকুচি পৌর এলাকার মুকুন্দগাতি বাজার এলাকায় ইসলামী ব্যাংকের পেছনের একটি পুকুর থেকে আরিফুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত আরিফুল বেলকুচি উপজেলার ক্ষিদ্রমাটিয়া মহল্লার শহিদ শেখের ছেলে স্থানীয় শেরনগর ফাজিল সিনিয়র মাদরাসার ৭ম শ্রেণির ছাত্র এবং মনতোষ কুমার উপজেলার ভাঙাবাড়ি ইউনিয়নের খাস সোনামুখী গ্রামের মঙ্গল সরকারের ছেলে।

আটকৃতরা হলেন কামারখন্দ উপজেলার বলরামপুর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে শিপন (৩২) ও বেলকুচি উপজেলার খাস সোনামুখী গ্রামের দেওয়ান কুমারের ছেলে সুজন কুমার।

নিহত মনতোষ কুমার সরকারের চাচাতো ভাই অচিন্ত কুমার সরকার জানান, সোমবার রাতে মনতোষ প্রতিবেশী সুজন কুমারের সঙ্গে পিকনিক খাওয়ার কথা বলে বলরামপুর গ্রামের শিপনদের বাড়িতে যায়। এরপর সে আর ফিরে আসে না। রাত ৩টার দিকে তার আরেক ভাই কৃষ্ণ কুমারের ফোনে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। মুক্তিপণের টাকা কীভাবে, কোথায় দিতে হবে তা নিয়ে রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত দফায় দফায় কথা হলেও অপহরণকারীরা ঠিকানা বলেনি। পরে দুপুরের দিকে থানায় অভিযোগ করা হয়।

বেলকুচি থানার উপ-পরিদর্শক শামীম আহমেদ জানান, মঙ্গলবার দুপুরে তার চাচাতো ভাই অচিন্ত কুমার থানায় অভিযোগ করেন। এর পরই শিপন ও সুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যমতে বুধবার সকালে বিশ্বাসবাড়ি হুড়াসাগর নদীর ব্রিজের নিচে কচুরিপানার ভেতরে লুকানো মনতোষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এদিকে নিহত মাদরাসা ছাত্র আরিফুল ইসলামের বাবা শহিদ শেখ অভিযোগ করে বলেন, আরিফুল তার চার সহপাঠীকে মাদকসেবী বলার কারণে শনিবার দুপুরে তাদের সঙ্গে তর্ক হয়। এক পর্যায়ে আরিফুলের কাছে থাকা তিন হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় ওই সহপাঠীরা। বিকেল ৩টার দিকে আরিফুলের মামার সহায়তায় ওই টাকা উদ্ধার করা হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় জুতা কেনার কথা বলে আরিফুল মুকন্দগাতি বাজারে যাবার পর সে আর বাড়ি ফেরেনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে পরদিন রোববার সকালে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।

বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন জানান, সোমবার সকালে মুকুন্দগাতি বাজারে ইসলামী ব্যাংকের পেছনের পুকুরে মাদরাসা ছাত্রের ভাসমান মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে।

তিনি আরও বলেন, অভিযোগ পেয়ে রাতেই তিন সহপাঠীকে আটক করে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে রাব্বী নামে অপর সহপাঠী পলাতক রয়েছে। পরে স্থানীয় কাউন্সিলরের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

ইউসুফ দেওয়ান রাজু/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।