টানা বর্ষণে সিলেট মহানগরের অধিকাংশ এলাকায় হাঁটুজল
দীর্ঘ ১২ ঘণ্টার টানা বর্ষণে সিলেট নগরের অধিকাংশ এলাকায় হাটুজল দেখা দিয়েছে। বুধবার রাত ৩টা থেকে শুরু হওয়া অবিরাম বৃষ্টিপাতে মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয় থেকে শুরু করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে বৃষ্টির পানি ঢুকে পড়েছে। নগরীর বিভিন্ন মার্কেটে ড্রেনের পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হওয়ায় পানি ঢুকে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের মালামালের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
নগরীর প্রধান প্রধান সড়কসহ পাড়া-মহল্লায় ড্রেন ভরে বৃষ্টির পানি রাস্তায় রাস্তায় প্রবাহিত হওয়ায় ভোগান্তি শিকার হয়েছে স্কুল-কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীসহ অফিসমুখী মানুষেরা। বেশির ভাগ স্কুল-কলেজে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখা হয়। এছাড়া অবিরাম বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা কোম্পানীগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ছাতক, সুনামগঞ্জ-দিরাইসহ বিভিন্ন স্থানে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। নদীর পানি তীব্র গতিতে প্রবেশ করছে বিভিন্ন গ্রামে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।
নগরের আম্বরখানা এলাকার বাসিন্দা সুমন আহমদ জানান, দীর্ঘ দিন ধরে সিলেট নগরের অন্যতম সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে আসছে জলাবদ্ধতা। তা সত্বেও মহানগরের পানি নিষ্কাশনে ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশনের উদাসীনতার মনোভাবের কারণে বার বার এ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন নগরবাসী।
জিন্দাবাজার এলাকার ব্যবসায়ী রিমন আহমদ জানান, গত রাতের অতিবৃষ্টির কারণে নগরীর বিভিন্ন ড্রেনের পানি উপচে সড়কে মধ্যে পানি জমে যায়। ফলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন ব্যস্ততম এলাকার প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে জমে থাকা পানির কারণে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। পরে বেলা ২টায় বৃষ্টি থামলে পানি রাস্তা থেকে নামতে শুরু জিন্দাবাজারের রাস্তাগুলোতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে।
নবাব রোড এলাকার আল মদিনা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অধ্যক্ষ মঈন আহমদ জানান, ক্লাস রুমে পানি ঢুকে পড়ার কারণে বাধ্য হয়ে স্কুল বন্ধ রাখতে হয়েছে। এ রোডের অন্যান্য স্কুলেও একই কারণে সাধারণ ছুটি ছিলো বলে তিনি জানান। এছাড়া ড্রেনে ঢাকনা না থাকায় অনেকেই ড্রেনে পড়ে দুর্ঘটনার স্বীকার হয়েছেন।
নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নগরীর পানি নিষ্কাশনের উৎস তথা খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টিতে শহাজালাল উপশহর, সোনারপাড়া, ভাতালিয়া, তালতলা, জামতলা, দাড়িয়াপাড়া, লামাবাজার, বিলপার, সুবিদবাজার, বনকলাপাড়া, হাউজিং এস্টেট, মিরাবাজার, যতরপুর, রায়নগর, ছড়ারপার, মাছিমপুর, জালালাবাদ, লোহারপাড়া, বাগবাড়ি, কুয়ারপাড়, চারাদিঘীরপাড়, রায়নগর, রায়হোসেন, হাওয়াপাড়া, কলবাখানি, যতরপুর, তালতলা, বিলপাড়, কাজলশাহ্, নবাবরোড, সৌরভ আবাসিক এলাকা, ঘাসিটুলা, বেতবাজার, মজুমদার পাড়া, মোলাপাড়া, দক্ষিণ সুরমার গোঠাটিকরসহ নগরের অন্তত ৫০টি এলাকার বাসা বাড়িতে বৃষ্টির পানি ঢুকেছে।
স্কুল শিক্ষক শাহিদা জামান জাগো নিউজকে জানান, ঘাসিটুলা এলাকার বেশির বাগ বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ে। ফলে সকালে ঘুম থেকে উঠেই মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হয়। এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত না থাকায় অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।
ছামির মাহমুদ/এআরএ/আরআই