বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় রূপা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৪:২৩ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০১৭

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে আসানবাড়ী নিজ গ্রামে পুলিশি পাহারায় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের কর্মী রূপা খাতুনের জানাজা নামাজ শেষে বাবার কবরের পশেই দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় বন্যার কারণে তাড়াশের বারুহাস ইউনিয়নের আসানবাড়ী গ্রামের আলামিন নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে রূপার জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর আসানবাড়ী মসজিদ সংলগ্ন সামাজিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশেই তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।

এ সময় বারুহাস ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেন, তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক আফসার আলী, উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান টুটুল ও পুলিশ প্রশাসনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে টাঙ্গাইল থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রূপার মরদেহ তাড়াশের আসানবাড়ী গ্রামের বাড়িতে পৌঁছার পর সেখানে এক হৃদয় বিদারক পরিবেশ তৈরি হয়। ভাই-বোন আত্মীয়-স্বজনসহ গ্রামের লোকজন কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এদিকে, রূপার মরদেহের কফিন গ্রামের বাড়িতে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গেই এলাকাবাসী কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং অপরাধীদের দ্রুত শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন।

গত ২৫ আগস্ট শুক্রবার রাতে বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে চলন্ত বাসে রূপাকে ধর্ষণের পর ঘাড় মটকে হত্যা করেন পরিবহন শ্রমিকেরা।

পরে তার মরদেহ টাঙ্গাইলের মধুপুর বন এলাকায় ফেলে যায় তারা। পুলিশ ওই রাতেই রূপার মরদেহ উদ্ধার করে। পরের দিন শনিবার টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রূপার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।

ওইদিনই টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থানে বেওয়ারিশ মরদেহ হিসেবে তাকে দাফন করা হয়। গত সোমবার রূপার বড় ভাই মধুপুর থানায় গিয়ে সেখানে সংরক্ষিত রূপার ছবি ও কাপড় দেখে মরদেহ শনাক্ত করেন।

রূপার মরদেহ টাঙ্গাইল থেকে তাদের বাড়ি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় নিয়ে যাওয়ার জন্য রূপার ভাই হাফিজুল মধুপুর থানায় গত বুধবার আবেদন করেন।

পুলিশ আবেদনটি টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠিয়ে দেয়। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম গোলাম কিবরিয়া বৃহস্পতিবার রূপার মরদেহ তুলে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আদেশ দেন।

বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুর রহিম সুজন ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাইয়ুম খান সিদ্দিকী টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থান থেকে মরদেহ তোলেন।

পরে তারা মরদেহটি রূপার ভাই হাফিজুলের কাছে বুঝিয়ে দেন। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থান থেকে মরদেহ বুঝে নিয়ে ভাই হাফিজুল ইসলাম প্রামাণিক বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন।

এ ঘটনায় ছোঁয়া পরিবহনের বাসটির চালক, সুপারভাইজার ও তিন সহকারীসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা সবাই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

ইউসুফ দেওয়ান রাজু/এএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।