ঝালকাঠির ৬৪ স্থানে পশুর হাট, বিক্রি নেই

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝালকাঠি
প্রকাশিত: ০৬:১২ এএম, ৩০ আগস্ট ২০১৭

ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঝালকাঠি জেলার ৪ উপজেলার ৬৪টি স্থানে বসেছে স্থায়ী ও অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট। স্থানীয় খামারি ও দূর-দূরান্ত থেকে নিয়ে আসা ফড়িয়াদের গরুতে এখন সরগরম হয়ে উঠতে শুরু করেছে হাটগুলো। কিন্তু ঈদুল আজহার আর মাত্র দুইদিন বাকি থাকলেও পশুর হাটগুলোতে ক্রেতাদের আগ্রহ এখনও তেমন একটা দেখা যায়নি। এনিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে হাট ইজারাদাররা।

ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলায় হাট রয়েছে ১৬টি। এর মধ্যে অস্থায়ী হাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে শহরের গুরুদাম ও পিপলিতা এলাকার শিমুলতলা বাজারে। নলছিটি উপজেলায় হাট রয়েছে ১৮টি। এর মধ্যে অস্থায়ী হাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে শহরের চায়না মাঠ ও কালিজিরা ব্রিজের পশ্চিম ঢালে। রাজাপুর উপজেলায় হাট রয়েছে ১৬টি। এর মধ্যে অস্থায়ী হাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে আলগী জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে। কাঠালিয়া উপজেলায় হাট রয়েছে ১৪টি। এরমধ্যে অস্থায়ী হাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে বটতলা বাজারে।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ঝালকাঠি জেলায় প্রাকৃতিকভাবে গরু মোটাতাজাকরণের খামারি রয়েছে ৩ হাজার ২৬৬ জন। তাদের খামারে গরু মোটাতাজা করা হয়েছে ১৬ হাজার ৯৩৩টি। সদর উপজেলার এক হাজার ১৬৬ জন খামারির গরু মোটাতাজাকরণের আওতায় রয়েছে ৪ হাজার ২৬০টি। নলছিটি উপজেলার ১ হাজার ২০ জন খামারির গরু মোটাতাজাকরণের আওতায় রয়েছ ৮ হাজার ১৯৭টি। রাজাপুর উপজেলার ৬৭৫ জন খামারির গরু মোটাতাজাকরণের আওতায় রয়েছে ২ হাজার ৫১৮টি। কাঠালিয়া উপজেলার ৪০৫ জন খামারির গরু মোটাতাজাকরণের আওতায় রয়েছে ১ হাজার ৯৫৮টি।

সদর উপজেলা প্রণিসম্পদ কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন আহমেদ জানান, প্রত্যেক খামারিকে প্রথমে গাভীর বাচ্চা (বাছুর) নির্বাচনের পর কৃমি মুক্ত করতে হবে। এর প্রাকৃতিক ঘাস, দানাদার খাবার, খৈল, ভুসি, ভাতের মাড় এবং বৈজ্ঞানিক উপায়ে তৈরি ইউরিয়া মোলাসেস স্টপ (ইউএমএস) পদ্ধতি ব্যবহার করে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন উপায়ে গরু মোটাতাজা করতে হয়।

নলছিটি উপজেলার বড় প্রেমহার গ্রামের খামারি মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ১২টি বাছুর নিয়ে গত বছর খামার করেছিলাম। এ বছর বেশ বড় হয়েছে। স্থানীয় কিছু ধনাঢ্য ব্যক্তি কোরবানির পশুর হাট শুরুর পূর্বেই আমার গরু গোয়াল থেকেই কিনে রেখেছে। এতে আমার বেশ লাভ হয়েছে।

Jalokati-Cowhat

সদর উপজেলার কির্ত্তীপাশা গ্রামের মোঃ সরোয়ার হোসেন বলেন, ৬টি গরু নিয়ে খামার শুরু করেছি। দেশীয় প্রাকৃতিক উপায়ে খাবার দিয়ে গরু বেশ মোটাতাজা করতে পেরেছি। কিন্তু হাট এখনও না জমে ওঠায় মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত সঠিক দাম না পাওয়ায় বিক্রি করতে পারিনি।

শহরের গুরুদাম পশুর হাটের ইজারাদার বাবুল হোসেন জানান, প্রতিবছর কোরবানি সময়ের ১৫ দিন আগেই হাট জমে ওঠে। কিন্তু আর ২ দিন পরেই ঈদুল আজহা তবুও ক্রেতাদের ভিড় শুরু হয়নি।

শহরের ব্যবসায়ী আনিচুর রহমান জানিয়েছেন, দিন দিন মানুষ ব্যবসা কেন্দ্রিক হওয়ার কারণে বাসাবাড়ির সামনের ফাঁকা জায়গা পূরণ করে ফেলে। তাই বাসার সামনে জায়গা না থাকায় বেশি মানুষ আগে গরু কিনতে চাচ্ছে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি জানান, প্রতিবছর কোরবানির আমেজ বেশ কিছুদিন আগেই শুরু হয়। কিন্তু এ বছর দেশের পরিস্থিতি ভালো না থাকার কারণে মানুষের মধ্যে সেই আমেজ নেই।

ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ হাসান জানান, পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কোনো প্রতারক চক্র যাতে জাল টাকা দিয়ে মানুষকে হয়রানি করতে না পারে এজন্য জাল টাকা শনাক্তকরণের জন্য মেশিন নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের একটি স্থানে বসানো হয়েছে। যাতে করে কারো কোনো টাকায় সন্দেহ হলে সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা করে নিতে পারে।

আতিকুর রহমান/আরএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।