এখন পেছনে ফিরে তাকানোর সময় নেই : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বাগেরহাট
প্রকাশিত: ১২:৪৬ পিএম, ২৩ আগস্ট ২০১৭

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে উঠে গেছে। এখন পেছনে ফিরে তাকানোর সময় নেই। তাই দেশকে যারা অশান্ত করতে চান তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুন।

বুধবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বনদস্যুদের পুনর্বাসনের জন্য বাগেরহাট শেখ হেলাল উদ্দিন স্টেডিয়ামে চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বলেন। অনুষ্ঠানে সুন্দরবনের আত্মসমর্পণকৃত ১৩২ বনদস্যুকে স্বাবলম্বী করতে আর্থিক সহায়তা হিসেবে দেড় লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়।

আত্মসমর্পণকারী বনদস্যুদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খুন ও নারী ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের মামলা যাদের নামে রয়েছে তারা ছাড়া অন্য সব বনদস্যুকে আইনি সহায়তা দেয়া হবে। যাদের আর্থিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে তারা যেন সে অর্থ কাজে লাগাতে পারে। এই অর্থ উকিল-মোক্তারদের পেছনে যাতে খরচ না হয় সেজন্যই এ পদক্ষেপ নেয়া হবে। তিনি বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের দ্রুত বনদস্যুদের মামলার তালিকা পাঠানোর আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বলেন, কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তি যদি সন্ত্রাসীদের প্রশয় না দেয়, সহযোগিতা না করে তাহলে তারা বেশি দিন টিকতে পারে না। সস্ত্রাসীরা যেন কোনো সাপোর্ট না পায় সেজন্য জনপ্রতিনিধিরা কাজ করে যাচ্ছেন।

অনুষ্ঠানে র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, সুন্দরবনে কোনো অপরাধ করতে দেয়া হবে না। এ লক্ষে সকলের সহযোগিতা চাই। বনদস্যুদের এই পেশা ছাড়াতে হবে। স্বাভাবিক জীবনে না ফিরে আসলে ১১৭ জন বনদস্যুর যে করুণ পরিণতি হয়েছে তাদেরও সেই করুণ পরিণতির জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ১ লাখ টাকা ছাড়াও এক্সিম ব্যাংকের পক্ষ থেকে বনসদস্যুদের প্রত্যেককে আরও ৫০ হাজার টাকা দেয়া হচ্ছে। তাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগের জন্য দেয়া হচ্ছে একটি মোবাইল সেট। ঈদ উদযাপনের জন্য প্রত্যেককে দেয়া হচ্ছে উপহার সামগ্রী। ফলে আত্মসমর্পণকারী বনদস্যুরা তাদের নেটওয়ার্কের আওতায় থাকবে।

র‌্যাব-৬ এর সিও খোন্দকার রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এ সময়ে অন্যান্যের মধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুন্সী, বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মোজাম্মেল হোসেন, বাগেরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য তালুকদার আব্দুল খালেক, বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মীর শওকাত আলী বাদশা, সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি হ্যাপী বড়াল, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক-৪ কবির বীন আনোয়ার, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আব্দুস সামাদ, খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মো. একরামুল হাবীব, ডিসি তপন কুমার বিশ্বাস, বাগেরহাট পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

২০১৬ সালের ২৯ মে সুন্দরবনের গহীনে র‌্যাবের হেফাজতে আসে বনদস্যু মাস্টার বাহিনী। ওই বছরের ৩১ মে মোংলার ফুয়েল জেটিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের হাতে সুন্দরবনের প্রথম কোনো বনদস্যু বাহিনী অস্ত্র-শস্ত্রসহ আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বনদস্যুদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরা শুরু হয়। এরপর ১৩ জুলাই বনদস্যু মজনু ও ইলিয়াস বাহিনী সহযোগীসহ আত্মসমর্পণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত এক বছরে ১২ বনদস্যু বাহিনীর ১৩২ জন সদস্য তাদের অস্ত্র-শ্স্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে আত্মসমর্পণ করে দস্যুতা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করে।

শওকত বাবু/আরএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।