জমছে শত বছরের পুরনো কসবা গরুর হাট
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার পৌর এলাকার শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী কসবা গরুর হাট এবার আগেভাগেই জমে উঠছে।
কোরবানির ঈদ ঘিরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা গরুর ব্যাপারীরা এরই মধ্যে বিক্রির জন্য এই হাটে গরু আনতে শুরু করেছেন। ভারতীয়, নেপালি ও দেশী গরুতে ভরে উঠছে কসবা গরুর হাট।
ইতোমধ্যে ক্রেতারাও আনাগোনা শুরু করেছেন। ক্রেতারা পশু দেখছেন, দাম যাচাই করছেন, তবে কিনছেন কম। ক্রেতাদের কাছে দেশী গরুর চাহিদা বেশি লক্ষ্য করা গেছে।
ব্যাপারী, ক্রেতা, হাট ইজারাদারসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এখন পর্যন্ত গরুর দাম তুলনামূলক কম ও সহনীয়। এবার ভারত থেকে প্রচুর গরু আমদানি হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে।
হাট ইজারাদার আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার জানান, আসন্ন কোরবানি উপলক্ষে গতকাল থেকে হাট শুরু হয়েছে। নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে নৌকায় (ট্রলার) গরু ব্যবসায়ীরা আসে এ হাটে গরু কেনার জন্য।
পাইকারি ব্যবসায়ীরাও দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ট্রাকভর্তি করে গরু আনেন বিক্রি করার জন্য। এছাড়া খুচরা পাইকাররা গ্রাম ঘুরে গৃহস্থের গরু ক্রয় করে এই হাটে বিক্রি করেন। এখন পর্যন্ত ক্রেতারা দাম কম বলছেন। তাই বেচাকেনা অনেক কম। ভরসা ঈদের আগের এক সপ্তাহ।
স্থানীয় প্রবীণ কেতাব আলী হাওলাদার (৮২) জানান, প্রায় একশ বছর আগে গোটা দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে একমাত্র গরুর হাট ছিল বর্তমান মাদারীপুরের গোপালপুর এলাকায়। সেখানকার হাট পরিচালনা কমিটির নেতাদের সঙ্গে বিরোধের জেরধরে কসবা গ্রামের মোচন খান, পবন খান, গনি মুন্সী, জহুর আলী খান, কাসেম খানসহ ১০-১৫ জন গরু ব্যবসায়ীরা কসবা এলাকার শাহ বংশের পরিত্যক্ত ভিটায় (বর্তমানে সরকারি সম্পত্তি) কসবা গরুর হাট প্রতিষ্ঠিত করেন।
হাটের কাছে মহাসড়ক ও আড়িয়াল খাঁর শাখা পালরদী নদীর অবস্থান হওয়ায় সড়ক ও নৌপথের সহজ যোগাযোগের কারণেই পর্যায়ক্রমে এই হাটের সুনাম গোটা দক্ষিণাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকার গরু ব্যবসায়ীরা এই হাটে আসতে শুরু করছেন।
তিনি আরও জানান, আগে এই হাটে গরু ক্রয়ের জন্য ব্যবসায়ীরা ১৫-২০টি বালামি নৌকা নিয়ে আসতো। প্রতিটি নৌকায় দেড় থেকে দুইশ গরু ভর্তি করে ব্যবসায়ীরা নিয়ে যেতো। কালের বির্বতনে দেশের বিভিন্নস্থানে গরুর হাট প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় কসবা গরুর হাটের কিছুটা জৌলুস হারিয়েছে। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে এই হাটের উদ্দেশ্যে ৫-৬টি বালামি নৌকা আসে।
সাইফ আমীন/এএম/জেআই্এম