রাজবাড়ীতে পানিবন্দি ২৮ হাজার পরিবার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি রাজবাড়ী
প্রকাশিত: ০৮:১৯ এএম, ১৮ আগস্ট ২০১৭

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির পানিতে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পেয়ে রাজবাড়ীর নদী তীরবর্তী ও বাঁধের ভিতর বসবাসরত নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২৮ হাজারের অধিক পবিরার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এতে পরিবার পরিজন ও গৃহপালিত পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন ওইসব পরিবার।

বন্যার পানির কারণে বসতবাড়ি, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদরাসা, হাট-বাজারে পানি ওঠাসহ তলিয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি ও পুকুর। অনেক স্থানে পাকা ও ইটের রাস্তা ভেঙে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে বসতবাড়িসহ অন্যান্য স্থাপনা।

রাজবাড়ী সদর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বন্যার পানিতে সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বরাট, মিজানপুর, চন্দনী ও খানগঞ্জ ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার ৪৮৭ পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। এ কারণে ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা ও খোলা হয়েছে ২টি আশ্রয়কেন্দ্র।

rajbari

এদিকে গোয়ালন্দ উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এবারের বন্যায় গোয়ালন্দ উপজেলার সবচেয়ে বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। উপজেলার দৌলতদিয়া, উজানচর ও দেবকগ্রাম ইউনিয়নের ১৬ হাজার ৯০০ পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। বন্ধ রয়েছে ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ছোটভাকলায় খোলা হয়েছে ৫টি আশ্রয় কেন্দ্র।

অপরদিকে কালুখালী উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কালিকাপুর ও রতনদিয়া ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ৩ হাজার ৭০০ পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। বন্ধ রয়েছে ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং খোলা হয়েছে ১টি আশ্রয়কেন্দ্র।

rajbari2

এছাড়া পাংশা উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হাবাসপুর ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নের প্রায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। এতে ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং খোলা হয়েছে ২টি আশ্রয় কেন্দ্র।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তৌহিদুল ইসলাম জানান, বন্যার পানির কারণে রাজবাড়ীর নিম্নাঞ্চলে অবস্থিত ২৮টি বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেছে। পানি নেমে গেলে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা হবে।

জেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান জানান, বন্যার পানি বৃদ্ধির কারণে রাজবাড়ী জেলায় এখন পর্যন্ত ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে। এর মধ্যে গোয়ালন্দে ৬টি, পাংশা ও কালুখালীতে ১টি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

rajbari2

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহা. মজিনুর রহমান জানান, পানি বৃদ্ধির ফলে রাজবাড়ীর সে সকল নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে তাতে ৫০টির মতো মাছের পুকুর তলিয়ে গেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ৭৩৩ হেক্টর জমির ফসল। এর মধ্যে বোনা আমান ৪৯৮ হেক্টর, রোপা আমন ২১২ হেক্টর, শাক-সবজি ১৯ হেক্টর ও ৪ হেক্টর জমির মরিচ।

রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় বন্যা, নদী ভাঙন ও অতিবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পর্যায়ক্রমে চাল ও নগদ অর্থ দেওয়া হচ্ছে।

রুবেলুর রহমান/এফএ/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।