রেজিস্ট্রেশনে একাধিক আঙুলের চাপ নিয়ে ২৮০০ সিম জালিয়াতি
বগুড়ায় ডিবি পুলিশের অভিযানে বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন করা প্রায় ২ হাজার ৮০০ সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। এই সিমগুলো চিহ্নিত অপরাধী ও ভিওআইপি ব্যবসায়ীদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করা হতো বলে তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা।
অভিযানকালে সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেরই তারা দীর্ঘদিন থেকে এভাবে হাজার হাজার সিম বিক্রির কথা স্বীকার করেছে।
জানা গেছে, একটি চক্র সাধারণ মানুষের কাছ থেকে একাধিক ফিঙারপ্রিট নিয়ে নাম, ঠিকানা ও ছবি জালিয়াতি করে চড়া মূল্যে বাজারে প্রিঅ্যাক্টিভেটেড সিম বিক্রি করছে। মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়া পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় একটি চক্রের সন্ধান মেলার তথ্য দিয়েছেন।
তিনি জানিয়েছেন এই চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৯ জনকে ডিবি পুলিশের একটি দল গ্রেফতার করেছে। শহরের দক্ষিণ কাটনারপাড়ায় চকযাদুক্রস লেনে এ অভিযান চালানো হয়। সেখানে ২ হাজার ৭৯৫টি বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন করা মোবাইল সিমসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
তারা হলেন দক্ষিণ কাটনারপাড়া এলাকার আশিক দৌলতানা অভি (৩৩), নয়ন ইসলাম (২৮), রিয়াল শেখ (২০), রাফিউল ইসলাম অন্তর (২০)। উদ্ধার করা সিমের মধ্যে ২৩৭০টি সিমকার্ডই রবির। বাকিগুলো গ্রামীণ ফোন ও টেলিটকের।
পুলিশ সুপার জানান, এই চক্রের হোতা হলেন অভি। তিনি বেশি দামে শতশত সিম বিক্রি করেন অপরাধীচক্র ও ভিওআইপি ব্যবসায়ীদের কাছে। তাকে সহযোগিতা করেন রবি মোবাইল অপারেটরের উত্তরাঞ্চলীয় ডিলার রাফিদ হাসান খান (২৬)।
তিনি বগুড়ার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী শহরের শিববাটি এলাকার বাসিন্দা গোলাম রসুল খান রানার ছেলে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাফিদসহ মোবাইল সিম ব্যবসায়ী চকঝপু পূর্বপাড়ার লিটন মিয়া (৩০), নিশিন্দারা পশ্চিমপাড়ার মঞ্জুরুল হক (২২), চাঙ্গুইড় পূর্বপাড়ার শফিউল আলম শাকিল (২৮) ও গাবতলীর জামিলবাড়িয়ার সেলিম রেজা (২৫)।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রবির উত্তরাঞ্চলীয় ডিলার রাফিদ হাসান খান তার নিয়োগ করা শত শত রিটেলার ব্যবসায়ীদের নির্দেশ দিয়েছেন সিম রেজিস্ট্রেশনের সময় একটির পরিবর্তে একাধিক আঙুলের ছাপ গ্রহণ করতে।
পরে অন্য আঙুলের ছাপে তারা এই অবৈধ সিমগুলোর বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন করে তারা বিভিন্ন চক্রের কাছে দ্বিগুণ তিনগুণ দামে বিক্রি করে। সাধারণ মানুষ জানতেও পারছে না এই ভয়াবহ অপকর্মের তথ্য।
লিমন বাসার/এএম/পিআর