পরীক্ষা দিয়েও ফলাফল সিটে নাম নেই মাহফুজের
ফেনীর দাগনভূঞায় এক ছাত্রের নাম কেটে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অন্য এক শিক্ষার্থীর নামে ফর্ম পূরণ করার অভিনব প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ চন্ডিপুর ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। আর এই প্রতারণার কারণে মাহফুজ নামের এক শিক্ষার্থী ২০১৫ সালের দাখিল পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেও ফলাফল বিবরণীতে তার নাম না আসায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
৩০ মে শনিবার সারা দেশে একযোগে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। পরীক্ষার ফলাফল আনতে উপজেলার দক্ষিণ চন্ডিপুর ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসায় যায় মাহফুজুর রহমান। কিন্তু তার প্রবেশপত্রের রোল (২৬৪১৯১) নম্বরে তার নামের পরিবর্তে বিবি মমতাজ নাম দেখে আকাশ ভেঙ্গে পড়ে দিন মজুর সফিউল্লাহর ছেলে মাহফুজুর রহমানের। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে একটি প্রবাভশালী মহল ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে দৌঁড়ঝাপ শুরু করে। শেষে সোমবার এক শালিশি বৈঠকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে রফাদফা করতে চাইলে রাজী হয়নি মাহফুজের পরিবার।
জানা যায়, দাগনভূঞা উপজেলার দক্ষিণ চন্ডিপুর ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসাায় অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত অনুমোদন থাকায় ওই মাদ্রাসার দাখিল পরিক্ষার্থীরা একই এলাকার দাগনভূঞা আজিজিয়া আলিম মাদ্রসার নামে পরীক্ষা দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের অনুষ্ঠিতব্য দাখিল পরিক্ষায় দক্ষিণ চন্ডিপুর মাদ্রাসার ৭ জন ছাত্র-ছাত্রী ফর্ম ফিলআপ করে।
কিন্তু ভুলবশত একজন ছাত্রীর নামে ফর্ম পূরণ হয়নি। ছাত্রীর পরিবার প্রভাবশালী বিধায় তাদের চাপে পড়ে ও ঘুষের বিনিময়ে চন্ডিপুর মাদ্রাসার সুপার আলাউদ্দিন, সহকারী শিক্ষক ফরিদ ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির কয়েকজন সদস্য আজিজিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষের শরণাপন্ন হলে আজিজিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ফারুক আহম্মেদ মজুমদার ফর্ম পূরণ সংশোধনীতে মাহফুজুর রহমানের নাম কেটে ওই ছাত্রীর নাম দেয়। পরবর্তিতে ছলচাতুরির মাধ্যমে চন্ডিপুর মাদ্রাসার সুপার আলাউদ্দিন ও সহকারী শিক্ষক ফরিদ (২৬৪১৯১) নং এ একটি ভুয়া প্রবেশপত্র কম্পিউটার থেকে বের করে নিয়ে ওই ছাত্রকে দেয়। ওই প্রবেশ পত্র দিয়ে ছেলেটি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।
এদিকে এ ঘটনা কাউকে জানালে বা কোন প্রতিবাদ করলে আগামীতে আর পরীক্ষা দিতে দেয়া হবে না মর্মে ওই ছাত্রকে হুমকি প্রদান করা হয়।
এ প্রসঙ্গে দক্ষিণ চন্ডিপুর মাদ্রাসার সুপার আলাউদ্দিন জানান ওই ছাত্র আমাদের না সে আজিজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র।
আজিজিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ফারুক আহম্মেদ মজুমদার জানান, দক্ষিণ চন্ডিপুর মাদ্রাসার শিক্ষকেরা যেভাবে করতে বলেছে আমরা সেভাবে করেছি।
দাগনভূঞা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদা খানম জানান, এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি তবে অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জহিরুল হক মিলু/এআরএস