বগুড়ায় বিপদসীমার উপরে যমুনার পানি, লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক বগুড়া
প্রকাশিত: ১১:৫৮ এএম, ১৪ আগস্ট ২০১৭

টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি ঘটছে। সরকারি হিসাবে সোমবার পর্যন্ত জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ায় ১৫ হাজার ৪৫৫ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এদিকে সারিয়াকান্দিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে ফেলতে পারে এমন খবরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকায় সতর্কতা মাইকিং করা হয়েছে। বাঁধের সুরক্ষায় সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, সারিয়াকান্দি উপজেলার মথুরাপাড়া পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৩০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে সোমবার সকাল ৬টায় বিপদসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আমিন বলেন, সারিয়াকান্দির মথুরাপাড়া পয়েন্টেও যমুনা নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতি গত জুলাই মাসের বন্যার রেকর্ডও ছাড়িয়ে যাবে।

বগুড়া জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা শাহারুল হোসেন মোহাম্মদ আবু হেনা বলেন, এখন পর্যন্ত সারিয়াকান্দি উপজেলার ৯টি, সোনাতলা উপজেলার ৩টি এবং ধুনট উপজেলার ২টিসহ জেলার ১৪টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।

সরকারি হিসাবে পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা সোমবার পর্যন্ত ১৫ হাজার ৪৫৫। প্রতি পরিবারে গড়ে ৫ জন সদস্য ধরলে সরকারি হিসাবে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা প্রায় ৭৫ হাজার। তবে স্থানীয়রা বলছেন পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা লক্ষাধিক ছাড়িয়ে যাবে।

সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, যমুনায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার চন্দনবাইশা, কামালপুর, কুতুবপুর, বোহাইল, কর্ণিবাড়ি, চালুয়াবাড়ি, হাটশেরপুর, কাজলা, সারিয়াকান্দি সদর ইউানয়নের অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বথা বলে জানা গেছে, বোহাইল, কর্নিবাড়ি, চালুয়াবাড়ি, কাজলা ও হাটশেরপুর ইউনিয়নের প্রায় ৭০টি চর এবং চন্দনবাইশা, কামালপুর, কুতুবপুর ইউনিয়নের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশে যমুনার তীরবর্তী ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দুর্গত লোকজন বাড়িঘর ছেড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। এ উপজেলার চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নের মানিকদাইর চর ও বহুলাডাঙ্গা চরে নদী ভাঙনে অর্ধশত পরিবার আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে।

সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরুজ্জামান বলেন, বন্য নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভেতরের অংশে যাদের বাড়ি ঘর পড়েছে তারা পানিবন্দি হয়ে পড়ায় নাশকতা করে বাঁধ কেটে ফেলতে পারে- এমন সংবাদে এলাকায় মাইকিং করে সকলতে সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়াও সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত দুর্গতদের জন্য ৫০ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ এক লাখ টাকা বরাদ্দ মিলেছে বলেও তিনি জানান।

আরএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।