ভাসমান বীজতলায় নতুন আশা কৃষকদের

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কিশোরগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৬:০৪ এএম, ১২ আগস্ট ২০১৭

চলছে আমন ধান রোপনের মৌসুম। প্রতিবছরই কিশোরগঞ্জে আমনের বীজতলা তৈরি নিয়ে দেখা দেয় নানা বিড়ম্বনা। সাধারণত অপেক্ষাকৃত উচু জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়। কিন্তু অতিবৃষ্টি কিংবা বন্যায় জমির পানি না সরলে কিংবা বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেলে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় কৃষকদের। দেখা দেয় আমন চারার সংকট। তবে কৃষকদের এ বিড়ম্বনা যেনো শেষ হতে চলেছে।

কিশোরগঞ্জে প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে আমন ধানের ভাসমান বীজতলা তৈরি। এতে করে আশার আলো দেখছেন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় স্থানীয় কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে জেলার ১০টি উপজেলায় ১৪৬টি ভাসমান বীজতলা তৈরি করা হয়েছে।

Kishorganj

জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে অর্ধেকের বেশি হাওর অধ্যুষিত। কৃষি বিভাগ জানায়, বাড়ির পাশের বদ্ধ ডোবা কিংবা হাওরের পানিতে কচুরিপানা দিয়ে মাচা তৈরি করা হয়। এসব মাচায় তৈরি করা হয় বীজতলা। এতে বাড়তি কোনো খরচ নেই। বীজতলা শেষ হয়ে যাওয়ার পর ওই মাচায় সবজি চাষ করা যায়। কয়েকবার সবজি চাষ করার পর মাচার পঁচা কচুরিপানা দিয়ে জমিতে জৈব সার তৈরি করা যায়। ফলে ভাসমান বীজতলা তৈরি করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলাম জানান, কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে জেলার ১০টি উপজেলায় প্রাথমিকভাবে আমনের ভাসমান বীজতলা তৈরি করা হচ্ছে। এবার প্রাথমিকভাবে জেলায় ৩০টি বীজতলা তৈরি করার টার্গেট ছিল। কিন্তু কৃষকদের আগ্রহে প্রথমবারেই জেলায় ১৪৬টি বীজতলা তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি জানান, ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও সোয়া এক মিটার প্রস্তের একেকটি ভাসমান মাচায় ধানের চারা দিয়ে এক বিঘা জমিতে আমন ধান রোপন করা যাবে। বিনা-৭ ও বিআর-২২ জাতের এসব চারা রোপন করা যাবে চলতি মাসের শেষ পর্যন্ত।

Kishorganj

এদিকে দেশে প্রথমবারের মতো তৈরি ভাসমান বীজতলা পরিদর্শন করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি ঊর্ধ্বতন পরিদর্শন দল। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোশারফ হোসেন ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব এসএম নাজমুল ইসলাম ও কৃষি বিভাগের সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক চৈতন্য কুমার দাস জেলার কটিয়াদী, কুলিয়ারচর, বাজিতপুর ও কিশোরগঞ্জ সদরের কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় এর সুফল নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন তারা।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবার কিশোরগঞ্জে ৮১ হাজার ৮৬২ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এসব জমি থেকে ২ লাখ ২৯ হাজার ২১৩ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।

নূর মোহাম্মদ/এফএ/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।