গাছে ঝুলিয়ে শিশু নির্যাতন : মামলা তুলতে হুমকির অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুষ্টিয়া
প্রকাশিত: ০২:৩৫ এএম, ১২ আগস্ট ২০১৭

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে গাছে ঝুলিয়ে দুই শিশু নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা মামলার বাদীকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন এলাকার প্রভারশালীরা। মামলার বাদী রব্বেল ও গোপনে নির্যাতনের ভিডিও ধারণকারী স্থানীয় যুবক আশরাফুলসহ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীকে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করেছেন।

এদিকে শিশু নির্যাতনের মামলায় আটক আসামি তানজিল ও তার শাশুড়ি রোকেয়া খাতুনকে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করে কুমারখালী থানা পুলিশ। বিলম্বে আদালতে হাজির হলে জামিন শুনানি না হওয়ায় আসামিদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। অপর আসামি মিরু এখনো পলাতক রয়েছে।

রোববার কারাগারে আটক আসামিদের রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন ওসি আব্দুল খালেক।

অপরদিকে নির্যাতনের শিকার শিশু জুয়েল বৃহস্পতিবার রাত থেকে প্রচণ্ড জ্বরে ভুগছে। জুয়েলের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, জুয়েলের সারা শরীর ফুলে গেছে। শরীরে ব্যাথার কারণে বৃহস্পতিবার রাত থেকে তার গায়ে প্রচণ্ড বইছে।

শিশু জুয়েলের বড় ভাই ও মামলার বাদী রব্বেল জানান, মামলা তুলে নিতে আমাকে অব্যহত হুমকি দেয়া হচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে তানজিল জেল থেকে বের হয়ে জুয়েল ও আমার বড় ধরনের ক্ষতি করবে বলে হুমকি দিয়েছেন তানজিলের নিকট আত্মীয় হাফিজুল ও তার পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার আরেক হোতা মিরু পলাতক থেকেও মামলা তুলে হুমকি দিচ্ছেন বলে জানান রব্বেল।

গোপনে ভিডিও ধারণকারী স্থানীয় যুবক আশরাফুল জানান, আমি প্রচণ্ড হুমকির মধ্যে রয়েছি। আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। গোপনে ভিডিও ধারণ করায় তানজিলের পরিবারের সদস্য আমার বোন ও বাবাকে অকথ্য ভাষায় বকাবকি করেছে। পুলিশ এলাকায় এসেছিল। হুমকির বিষয়টি আমরা পুলিশকে জানিয়েছি।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল খালেক জানান, নির্যাতিত শিশুটির পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় কয়েকজনকে হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে জানতে পেরে আমি পুলিশ ফোর্স নিয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। পুলিশ সর্বাক্ষণিক এলাকায় খোঁজ-খবর রাখছে। পলাতক আসামি মিরুকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। যেকোনো সময় তাকে গ্রেফতার করা হবে।

উল্লেখ্য বুধবার বিকেলে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়া চরমন্ডলপাড়া এলাকায় মোরাইল চুরির অপবাদ দিয়ে সাত বছরের এতিম শিশু জুয়েল ও আসিফকে আমগাছে দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। শিশু দুটি মোবাইল চুরি করেনি বলে শত আকুতি করলেও তাদেরকে দুই ঘণ্টা ধরে মারপিট করা হয়।

পরে শিশু আসিফের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা নিয়ে আসিফকে ছেড়ে দেয় তারা। বেধড়ক মারপিটে কারণে শিশু জুয়েল গুরুতর আহত হয়ে পড়লে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। শিশু নির্যাতনের ভিডিওটি বৃহস্পতিবার ফেসবুকে ভাইরাল হলে কুষ্টিয়া জুড়ে শুরু হয় তোলপাড়।

আল-মামুন সাগর/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।