মাহামুদার রোগও পুরোপুরি আরোগ্যযোগ্য নয়
বিরল রোগে আক্রান্ত দিনাজপুরের বিরল উপজেলার বনগাঁও গ্রামের ৮ বছর বয়সী শিশু মাহামুদা আক্তার পুরোপুরি আরোগ্যযোগ্য নয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাকে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।
এর আগে সাতক্ষীরার শিশু মুক্তামণির রোগও আরোগ্যযোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা। বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তা বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
বুধবার জাগো নিউজের এই প্রতিবেদককে এমনটাই জানালেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক লে: কর্নেল (অব:) ডা. মো. আব্দুল ওয়াহাব।
তিনি বলেন, মাহামুদা Epidermolysis Bullosa নামে রোগে আক্রান্ত। এটি মূলত জ্বিনগত সমস্যা। বংশের কারও পূর্বে এ সমস্যা থাকার কারণেই হয়তো মাহামুদারও হয়েছে রোগটি। স্বামী বা স্ত্রীর কারও বংশে এ রোগ থাকলে তাদের সন্তানদেরও আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে।
তিনি আরও বলেন, মাহামুদার সারা শরীরে ঘায়ের মতো হয়ে গেছে। জ্বিন থেরাপির মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কিন্তু আমাদের দেশে সেই চিকিৎসা নেই। যতদিন মাহামুদা বেঁচে থাকবে তাকে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। তবে এ চিকিৎসায় পুরোপুরি আরোগ্য না হলেও নতুন করে আক্রান্ত হবার সম্ভবনা থাকবে না।
রোগটি ছোঁয়াচে কীনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি ছোঁয়াচে কোনো রোগ নয়। তবে এটি বংশগত।
শিশু মাহামুদা আক্তার বিরল উপজেলার বনগাঁও গ্রামের গাডাংপাড়ার ভ্যানচালক আবদুর রহিমের মেয়ে। জন্মের পরপরই শরীরে একটি ফসকা উঠেছিল তার। এরপর থেকেই তার সম্পূর্ণ শরীর ঘা দিয়ে ভরে যায়। এই ঘায়ের কারণে হাত ও পায়ের চামড়া উঠে যাচ্ছে তার। এক পর্যায়ে পায়ের আঙ্গুলগুলোও মিশে গেছে মাহমুদার।
মাহামুদাকে গত ৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। সে হাসপাতালের সি ব্লকের চর্ম ও যৌন বিভাগের ৩নং ওয়ার্ড এর ৩২৭নং কক্ষের ৩নং বেডে চিকিৎসাধীন।
সম্প্রতি মাহামুদাকে নিয়ে জাগো নিউজসহ বেশ কিছু গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর দিনাজপুরের সিভিল সার্জন ড. মওলা বক্স চৌধুরী তাকে দেখতে তার বাড়িতে যান। মাহামুদাকে দেখাকে তিনি তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরামর্শ দেন।
মাহমুদার বাবা আব্দুর রহীম বলেন, এতদিন অভাবের কারণে মেয়ের চিকিৎসা করতে পারিনি। সবার সহযোগিতায় তাকে ঢাকায় নিয়ে এসেও হতাশ হলাম। শুনছি পুরোপুরি সুস্থ হবে না আমার মেয়ে। জানি না মেয়েটার পরিণতি কী হবে?
মাহামুদার মা শহীদা বেগম বলেন, আমার মেয়েটা সুস্থ হবে না শুনে মনটা ভেঙে গেছে। কী বুঝতে পারছি না।
এমএএস/এমএস