রায় পুনর্বিবেচনার দাবি বিশ্বজিতের পরিবারের
২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রকাশ্যে পুরান ঢাকার দর্জি দোকানি বিশ্বজিৎ দাসকে হত্যার ঘটনায় উচ্চ আদালতের দেয়া রায়ের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তার পরিবার। তারা আদালতের দেয়া রায় পুনর্বিচেনার দাবিও জানিয়েছেন।
বিশ্বজিতের পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা অবরোধের সময় পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের সম্মুখে প্রকাশ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে বিশ্বজিৎকে। ঘটনার পর ২০১৩ সালের মার্চ মাসে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ নেতাকর্মীকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
একই বছর ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ৮ জনকে ফাঁসি ও ১৩ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।কিন্তু এ রায়ের পর আপিলের প্রেক্ষিতে গতকাল রোববার উচ্চ আদালত দুইজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল, চার জনের মৃত্যুদণ্ড পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন ও ২ জনকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ১৩ আসামির মধ্যে যে দুজন আপিল করেছিলেন তারা খালাস পেয়েছেন। এছাড়া নিম্ম আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া পলাতক ১১ আসামির ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি আদলত।
কিন্তু এই রায়ে বিশ্বজিতের পরিবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সরেজমিনে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর বাজার সংলগ্ন মশুরা ঘোষপাড়ায় বিশ্বজিতের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, রায় শোনার জন্য সকাল থেকেই পরিবারের লোজনসহ গ্রামের অধিকাংশ অধিবাসী টিভি সেটের সামনে বসেছিলেন। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে যায়।
কিন্তু বিকেল সাড়ে ৪টায় টিভিতে রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। তাদের সঙ্গে বাড়িতে থাকা অন্যান্য স্বজনরাও কান্নায় ভেঙে পড়েন।
বিশ্বজিতের বাবা অনন্ত দাস ও মা কল্পনা রানী দাস বলেন, বিশ্বজিৎকে মারার দৃশ্য মিডিয়ায় প্রচার হলো, সারা পৃথিবী দেখলো ৮-১০ জন কুপিয়ে হত্যা করলো। কিন্তু আজ সেখানে দুইজনের ফাঁসির আদেশ হলো। বিশ্বজিৎকে যারা প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে তাদের শাস্তি আমরা যেন দেখে যেতে পারি।
তারা আরও বলেন, উচ্চ আদালতের রায়ে আমরা খুশি হতে পারিনি। সরকার এবং আদালতের প্রতি সবিনয় আবেদন যাতে রায় পুনর্বিবেচনা করা হয়।
ছগির হোসেন/এফএ/জেআইএম