খালে নেমে কচুরিপানা পরিষ্কার করলেন ইউএনও
যশোরের অভয়নগর উপজেলার জলাবদ্ধ এলাকার বিভিন্ন খালে পানি প্রবাহের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে কচুরিপানা স্বেচ্ছাশ্রমে অপসারণ করা হয়েছে।
স্বেচ্ছাশ্রমের এই কর্মযজ্ঞে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে ময়লা পানিতে নেমে নিজ হাতে কচুরিপানা পরিষ্কার করলেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনদীপ ঘরাই।
শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ৬টি খালের ৭ কিলোমিটারজুড়ে এ কচুরিপানা অপসারণ করা হয়। স্বেচ্ছাশ্রমে প্রায় ১৫০০ মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেন।
টানা বর্ষণ ও জোয়ারের পানিবৃদ্ধির ফলে অভয়নগর উপজেলার ৪ ইউনিয়ন জলাবদ্ধ হয়ে হাজার হাজার পরিবার গত ২০ দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
পানিবন্দি অনেক পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে গৃহপালিত পশু নিয়ে সড়কে ঘর বানিয়ে আশ্রয় নিতে শুরু করে। পানিবন্দি মানুষের কথা চিন্তা করে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদ যৌথভাবে বিভিন্ন খাল ও বিল থেকে নেট, পাটা, কারেন্ট ও জাল উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে। কিন্তু পানি প্রবাহের আরেক প্রতিবন্ধকতা কচুরিপানা ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
শুক্রবার উপজেলা প্রশাসন দিনব্যাপী জলাবদ্ধ এলাকার বিভিন্ন খালে পানি প্রবাহের প্রতিবন্ধকতা কচুরিপনা অপসারণের জন্য স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ শুরু করে।
এতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মনদীপ ঘরাই’র নেতৃত্বে সুন্দলী ও চলিশিয়া ইউনিয়নের ৬টি শুরুত্বপূর্ণ খাল থেকে মোট ৭ কিলোমিটারজুড়ে কচুরিপানা অপসারণ করা হয়।
এছাড়া এ কাজে অংশগ্রহণ করেন, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার বিশ্বজিৎ কুমার দেব, কৃষি অফিসার গোলাম ছামদানী, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফিরোজ আহম্মেদ, সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিকাশ রায়, ইউপি সদস্য প্রকাশ মল্লিক, নওয়াপাড়া প্রেসক্লাব, পেশাজীবী, শ্রমজীবী, সাংস্কৃতিক, সামাজিক, স্কাউট, অভয়নগর ব্লাড ব্যাংক, রেনেসাঁ, প্রতিবন্ধী, চিকিৎসক, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অন্তত ১৪ শতাধিক মানুষ।
অপসারণ কার্যক্রম শেষে ভারপ্রাপ্ত ইউএনও মনদীপ ঘরাই বলেন, গত ২০ দিন ধরে সুন্দলী, চলিশিয়া ও পায়রা ইউনিয়নের ৮৬টি গ্রামের হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে। নেট, পাটা, কারেন্ট জাল উচ্ছেদ করলেও পানি নিষ্কাশনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে কচুরিপানা। জলাবদ্ধ এলাকার বেদভিটা, কুলটিয়া, বলারাবাদ, আমডাঙ্গা, পাথরঘাটা ও সিমানা খালে পানি প্রবাহের বাধা সৃষ্টিকারী কচুরিপানা গত ৭ ঘণ্টায় অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে। দুই থেকে তিনদিনের মধ্যে জলাবদ্ধ গ্রাম থেকে পানি কমে যাবে এবং জীবন যাত্রার মান স্বাভাবিক হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মিলন রহমান/এএম/এমএস