দুই পাড়ে শৌচাগার গড়ে তোলা নদীর পানি খাচ্ছেন তারা

দখল আর দূষণে অচল হয়ে পড়েছে নেত্রকোনার পৌরশহরের ধলাই নদী। ২০ বছর ধরে নদীটি এভাবে পড়ে থাকলেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। একই সঙ্গে নদীর দুই পাড়ে শৌচাগার গড়ে তোলা হলেও সেদিকে নজর নেই কারও। উল্টো সেই নদীর পানিই সব কাজে ব্যবহার করছেন তারা।
নদীর দুই পাড়ের লোকজন নদীর দূষিত পানি ব্যবহার করার ফলে চর্মরোগসহ নানা পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পানি সঙ্কটের কারণে বাধ্য হয়েই ময়লাযুক্ত পানি ব্যবহার করছেন তারা। ময়লার স্তূপের পাশে স্থানীয় লোকজন পানির অভাবে গোসল করছেন দূষিত পানিতে। সেই সঙ্গে রান্না-বান্নাসহ সব কাজে এ পানি ব্যবহার করছেন।
ধলাইনদীর প্রায় দুই কিলোমিটার স্থানে এভাবেই ময়লা-আবর্জনা ও কচুরি পানা পচে নষ্ট হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ। ২০ বছর ধরে জমে থাকা কচুরি পানা আর আশপাশ থেকে ফেলা আবর্জনায় নদীর পানি হয়ে পড়েছে দূষিত। পানির সঙ্কট থাকার কারণে প্রতিদিন ধলাই নদীর দূষিত পানিই ব্যবহার করছেন নদীর দুই তীরের বাসিন্দারা।
নেত্রকোনা পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি তানভীর জাহান চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, এই নদীকে মেরে ফেলা হয়েছে। চারদিক থেকে দখলের থাবা। এই নদীটি এক ঐতিহ্যের সাক্ষী। ঐতিহাসিক সোনাই মাধব লোক পালার অনেক স্থানে এই নদীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই নদীকে ঘিরে হতে পারে নেত্রকোনার সৌন্দর্যের অপূর্ব লীলাভূমি। অথচ সেই নদী দূষণে এখন মৃত। নদীকে জীবিত করতে প্রশাসনের উদ্যোগ নেয়া জরুরি।
নেত্রকোনা জেলা সুজন’র (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সভাপতি শ্যামলেন্দু পাল জাগো নিউজকে বলেন, নেত্রকোনা শহরের তিন পাশ দিয়ে মগড়া নদী অন্যপাশে হচ্ছে ধলাই নদী। ধলাই নদীর দুই তীরে একদিকে লেট্রিন নির্মাণ করেছে স্থানীয়রা। অন্যদিকে এই পানিই ব্যবহার করছেন তারা। সময় মতো পৌরসভার পানি না পাওয়ায় এই দূষিত পানিই ব্যবহার করছে স্থানীয়রা। এ পানি ব্যবহার করে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে লোকজন। দ্রুত নদীটি পরিষ্কার করে পানি ব্যবহার উপযোগীসহ নদী দখল থেকে রক্ষা করতে হবে।
নেত্রকোনার পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম খান জাগো নিউজকে বলেন, ধলাই নদীটি রক্ষায় মেগা প্রকল্প নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে প্রকৌশলী এসে পরিকল্পনা তৈরি করে নিয়ে গেছেন। রাজু বাজার থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার অংশকে খনন করে দুই পাড়ে ওয়াকওয়ে তৈরির পর লাইটিং করে সৌন্দর্য বর্ধন করা হবে।
তিনি বলেন, প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ কোটি টাকার ডিপিপি করা হচ্ছে নদীটি রক্ষায়। মগড়া নদী এবং ধলাই নদীর প্রকল্প দুইটি বাস্তবায়িত হলে নেত্রকোনা শহরের সৌন্দর্য বর্ধনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
কামাল হোসাইন/এএম/আরআইপি