পড়াশোনা করতে চাওয়ায় ঘর ভাঙল গৃহবধূর
পড়াশোনা করতে চাওয়ায় গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় জান্নাতী আক্তার (১৪) নামে এক গৃহবধূর সংসার ভেঙেছে। শুক্রবার দুপুরে ধাপেরহাট ইউনিয়নের পালানপাড়া গ্রামে তালাকের মাধ্যমে জান্নাতী আক্তার তার বাবার বাড়িতে চলে যায়।
জান্নাতী আক্তার ধাপেরহাট তফেজান নেছা দ্বিমুখী দাখিল মাদরাসার ৮ম শ্রেণির ছাত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত এপ্রিল মাসে ধাপেরহাট ইউনিয়নের পালানপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে অটোভ্যান চালক রবিউল ইসলামের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী ইদিলপুর ইউনিয়নের চকনদী গ্রামের জাহিদুল ইসলামের মেয়ে জান্নাতি আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর জান্নাতি মাদরাসায় যেতে চাইলে রবিউল ইসলাম ও তার পরিবারের লোকজন তাকে বাঁধা দেয়।
পড়াশোনা বন্ধ করতে জান্নাতি আক্তার রাজি না হওয়ায় তাদের সংসারে কলহ লেগেই থাকতো। এর জন্য মারধরের শিকারও হতে হয়েছে তাকে। মেয়ের সংসারে অশান্তির কথা জানতে পেরে বাবা জাহিদুল ইসলাম শুক্রবার সকালে মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে গেলে দুই পরিবারের সিদ্ধান্তক্রমে তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জান্নাতী আক্তার বলে, আমি পড়াশোনা করতে চাইলে আমাকে মারধর করা হতো। আমাকে মাদরাসায় যেতে দেওয়া হতো না। আমি পড়াশোনা করতে চাই।
ইদিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মোজাফফর মুঠোফোনে জাগো নিউজকে বলেন, জান্নাতির বয়স কম থাকায় বিয়ের সময় বাধা দেওয়া হয়েছিল। পরে চুপিসারে ওই বিয়ে হয়। এরপর জান্নাতি পড়াশোনা করতে চাইলে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাধা দেয়। এতে সংসারে অশান্তি শুরু হলে শুক্রবার দুপুরে দুই পরিবারের সিদ্ধান্তক্রমে তালাক হয়।
তিলকপাড়া তফেজান নেছা দ্বিমুখী দাখিল মাদরাসার সুপার মো. রফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে জাগো নিউজকে বলেন, জান্নাতি খুব মেধাবী ছাত্রী। তার পড়াশোনার প্রতি অনেক আগ্রহ রয়েছে। তার ইচ্ছার বিরুদ্ধেই বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন সময় জান্নাতিসহ গরীব শিক্ষার্থীদের বেতন ও পরীক্ষার ফি মওকুফ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জান্নাতি মাদরাসায় না আসায় আমরা তার বিয়ের কথা জানতে পারি। আগে জানলে বাল্যবিয়ে বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হতো। জান্নাতি পড়াশোনা করতে চাইলে আবারও মাদরাসায় আসতে পারবে।অনেকদিন স্কুলে না আসায় সে পিছিয়ে পড়েছে। তার পড়াশোনার প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখা হবে।
রওশন আলম পাপুল/এফএ/এমএস