সমতল ভূমির খালে ফুটেছে লোহাগড়ার ২০ হাজার কৃষকের হাসি
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার নোয়াগ্রাম এলাকায় সমতল ভূমিতে খাল খনন করায় ১৫ গ্রামের কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। উপকৃত হয়েছেন এ অঞ্চলের অন্তত ২০ হাজার কৃষক। এছাড়া গভীর নলকূপের ওপর নির্ভরশীলতাও কমেছে। ধান ও সবজি উৎপাদন এবং পাট জাগ দেয়াসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত্রে এ খালের পানি ব্যবহার করা হচ্ছে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে খালটি খনন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে লোহাগড়ার নোয়াগ্রাম এলাকায় প্রায় ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে খালটি খনন করা হয়েছে। খালের দৈর্ঘ্য প্রায় তিন কিলোমিটার, প্রস্থ ৬০ ফুট ও গভীরতা ১২ ফুট।
খালটি নবগঙ্গা নদীর ধোপাদাহ এলাকায় মিলিত হয়েছে। নামকরণ করা হয়েছে ‘দোদাঁড়িয়া খাল’। এর ফলে নোয়াগ্রাম, লাহুড়িয়া, নলদী, জয়পুর ও কাশিপুর ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের অন্তত ২০ হাজার কৃষক উপকৃত হয়েছেন। এই পাঁচটি ইউনিয়নের প্রায় ১২ কিলোমিটার বিলের কৃষি জমিতে সেচ এবং পানি নিষ্কাশন সুবিধা পাবেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা।
নোয়াগ্রামের হারুন মোল্যা জানান, এলাকাবাসীর স্বেচ্ছায় জমিদানের মধ্য দিয়ে দোদঁড়িয়া খাল খনন করা হয়েছে। এতে এ অঞ্চলের হাজারো কৃষক উপকৃত হবেন।
একই এলাকার সৈয়দ তসলিম বলেন, এতদিন এলাকার কৃষকেরা গভীর নলকূল থেকে পানি উত্তোলন করে ফসল ফলাত এতে উৎপাদন খরচ বেশি হতো। খরা মৌসুমে সেচপাম্পে প্রয়োজন মতো পানি না পাওয়ায় অনেক জমি অনাবাদি পড়ে থাকত। এখন খালে পানি পাওয়ার সেচ সমস্যার সমাধান হয়েছে।
শুলটিয়া গ্রামের শাহনেওয়াজ বলেন, খাল খননের আগে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে গিয়ে পাট জাগ দিতে হয়েছে; এতে ফসলের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়াসহ সময়ের অপচয় হতো। এ বছর আমরা এই খালে সহজে পাট জাগ দিতে পারব।
নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের সদস্য (মেম্বার) আহাদ শেখ বলেন, এই খাল খননে পাঁচ ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের ২০ হাজার কৃষকের উপকার হয়েছে। এলাকাবাসীর যাতায়াতের সুবিধার্থে খালের ওপর এখন ব্রিজ নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে।
লোহাগড়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটু বলেন, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি প্রেক্ষিতে এ খালটি খনন করা হয়েছে। খালটির একপ্রান্ত নবগঙ্গা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। অপরপ্রান্তে মানিকগঞ্জ বাজার এলাকায় দুই কিলোমিটার খাল খনন হলে মধুমতি নদীর সঙ্গে মিলিত হবে। ফলে দুই নদীর পানি এ খালে মিলিত হবে। এতে কৃষি জমিতে পলি মাটি পড়বে এবং জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পাবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ দফতরের জেলা কর্মকর্তা এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, এই খাল পাড়ে তালগাছ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া খননকৃত মাটি দিয়ে খালপাড়ে কৃষকদের চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে।
হাফিজুল নিলু /এফএ/আরআইপি