বছরে ৩০ হাজার রোগী কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা পাচ্ছেন


প্রকাশিত: ০৩:৪৯ এএম, ২৫ মে ২০১৫

জয়পুরহাটের গ্রামীণ জনপদের অসহায় দরিদ্র রোগীদের চিকিৎসা সেবা দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগীরা অর্থাভাবে জেলা সদরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পারেন না। তোই সেখানে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো রোগীর বিভিন্ন রোগের প্রারম্ভিক চিকিৎসা সেবা ছাড়াও গর্ভবর্তী মা ও শিশুদের ওজন ও উচ্চতা মাপা, ডায়াবেটিক পরীক্ষা, আয়রন, ভিটামিন, নিরাপদ গর্ভধারণের জন্য নানারকম পরামর্শ, শিশুদের ভিটামিন, ক্রিমিনাশক ও পোলিও টিকার ক্যাম্পেইনসহ প্রাথমিক স্বাস্থ্য শিক্ষা দিয়ে থাকে। এছাড়াও ২৯ প্রকারের ঔষধ বিনামূল্যে দেয়া হয় রোগীদের।

জয়পুরহাট জেলার ১২ লাখ গ্রামীণ জনপদের মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে ১১৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক কাজ করে যাচ্ছে, ফলে অসহায় দুস্থ রোগীরা তাদের দরজায় চিকিৎসা সেবা পেয়ে তাদের মনে আশার সঞ্চার হয়েছে। প্রত্যেকটি কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বছরে  প্রায় ৩০ হাজার রোগী চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন।

কমিউনিটি ক্লিনিক ১৯৯৬ সালে নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেয় সরকার। সেই থেকে পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয় করে ২০০২ সালে নির্মিত হয় জেলায় ১১৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক। স্থানীয় এলজিইডি কর্তৃপক্ষ দ্রুত নির্মাণের পর তা স্বাস্থ্য বিভাগের হাতে বুঝে দেয়। পরবর্তীতে সরকার জনবল নিয়োগ করে পুরোদমে অবহেলিত গ্রামের চিকিৎসা বঞ্চিত মানুষদের চিকিৎসা সেবা প্রদান শুরু করে।

কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় প্রত্যেকটি ইউনিয়নে একজন করে উৎসাহী ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ক্লিনিক স্থাপনের জন্য ৫ শতক করে জমি প্রদান করেন। দান করা এই জমির উপরে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রতিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়। ক্লিনিক পরিচালনার জন্য কমিউনিটি গ্রুপ (১৩-১৭ জন) ও সাপোর্ট গ্রুপ (৫১ জন) নামে দুটি গ্রুপ রয়েছে। পদাধিকার বলে উক্ত গ্রুপগুলোর সভাপতি স্থাপিত ক্লিনিক এলাকার মেম্বারগণ এবং উৎসাহী জমি দাতা ক্লিনিক পরিচালনা কমিটির আজীবন স্থায়ী সদস্য হবেন।

চিকিৎসা নিতে আসা জয়পুরহাট সদর উপজেলার বড়তাজপুর গ্রামের সুমিত্রা রাণী, দীপ্তি রাণী, মোসলেমা, কাশেম দেওয়ান জানান, বিভিন্ন রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দোড়গোড়ায় পেয়ে তারা খুব খুশি ।

ক্লিনিক পরিচালনা কমিটির সদস্য ও অব. ইংরেজি শিক্ষক নগেন্দ্রণাথ বলেন, তিন হাজারেরও বেশি রোগীর জন্য একটি ক্লিনিক, যা অপ্রতুল। আরো ক্লিনিক করা প্রয়োজন। এছাড়া দুই মাসের ঔষধ বরাদ্দ থাকলেও রোগী বেশি হওয়ায় দেড় মাসেই ঔষধ শেষ হয়ে যায়। ফলে আরো ঔষধের বরাদ্দ প্রয়োজন।

কমিউনিটি হেলথকেয়ার প্রোভাইডার (সি এইচ সি পি) মীর শহীদ জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের তিন মাসের বেসিক স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ দেয়া থাকলেও আরো প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।

জয়পুরহাটের সিভিল সার্জন ডা. এস এম আব্দুল জলিল ও সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লাইলী আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, অসহায় দরিদ্র রোগীরা দোরগোড়ায় চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর মাধ্যমে যা সরকারের একটি ভালো উদ্যোগ।

এমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।