ভৈরবে দীর্ঘ ৬ মাসেও সারের সরবরাহ পাননি ডিলাররা


প্রকাশিত: ১২:১২ পিএম, ২৪ মে ২০১৫

ভৈরবে বিএডিসি সার গুদাম থেকে সার আত্মসাৎ হওয়ার ঘটনার দীর্ঘ ৬ মাস অতিবাহিত হলেও ডিলাররা তাদের পাওনা ৪৬০ মে. টন (৯ হাজার ২শ বস্তা) সার এখনো পাননি। ফলে তারা আর্থিক ও ব্যবসায়িকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বলে রোববার ভৈরব প্রেসক্লাবে এসে জাগোনিউজ প্রতিনিধির কাছে অভিযোগ করেছেন।

কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার ডিলার মো. বকুল মিয়া অভিযোগে জানান, ঘটনার দু’দিন আগে আমি ২১.৭৫ মে.টন সার গুদামে ক্যাশ মেমো করেছি। ডেলিভারির সিরিয়াল অনুযায়ী ৩ দিন পর গুদাম রক্ষক মো. খোরশেদ আলম আমাকে উক্ত সার সরবরাহ দেওয়ার কথা ছিলো। আত্মসাৎ হওযার ঘটনার পর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ গুদামটি সীলগালা করে দিলে আজ পর্যন্ত আমি সার সরবরাহ পায়নি।

এদিকে, ইটনা উপজেলার ডিলার রূপা এন্টারপ্রাইজের মালিক বাবু স্বপন কুমার সাহার পাওনা সারের পরিমাণ ১২.১০ মে.টন, গাজীপুর জেলার ডিলার মো. রমিজ মিয়া ২৩ মে. টন, আব্দুল সাহিদ ১৪ মে. টন। তারা সবাই স্বল্প পুঁজি নিয়ে ব্যবসা করেন বলে জানান।

গত মঙ্গলবার (১৯ মে) সার আত্মসাতের ঘটনাটি তদন্ত করতে জাতীয় সংসদের কৃষি মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সাব কমিটির আহ্বায়হকসহ ৩ জন সংসদ সদস্যের প্রতিনিধি দল ভৈরব গুদামটি পরিদর্শন করতে আসেন। এদিনও ডিলাররা ওই কমিটির সদস্যদের নিকট তাদের পাওনা সার অবিলম্বে সরবরাহ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

বিএডিসির ডিলার রমিজ মিয়া ও বকুল মিয়া তাদের অভিযোগে জানান, আমরা নগদ টাকা পে-অর্ডার করে ক্যাশ মেমো করে সার কিনেছি। বিএডিসির মত একটি বৃহৎ প্রতিষ্ঠান থেকে আমরা বরাদ্ধকৃত সার ক্রয় করেছি, গুদাম রক্ষকের কাছ থেকে নয়। যদি গুদাম রক্ষক সার আত্মসাৎ করে থাকে তাহলে কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে। এতে আমাদের অপরাধ কি?

পাওনা ৪৫ জন ডিলারের ৪৬০ মে. টন সারের মূল্য প্রায় ৮০ লাখ টাকা বলে জানা গেছে। এদিকে উল্লে­খিত বরাদ্ধের সার আজও তারা সরবরাহ না পাওয়ায় এলাকায় সার পৌঁছেনি। ফলে কৃষকরাও জমিতে উক্ত সার ব্যবহার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এদিকে এ ঘটনার পর ৬ মাস অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত বিএডিসির ভৈরব সারের গুদামটি চালু না হওয়ায় ডিলাররা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। গুদামটি চালু না হওয়ায় ডিলাররা অন্যান্য গুদাম থেকে তাদের এলাকায় সময় মতো সার না পৌঁছানোর কারণে এলাকায় প্রায়ই সার সঙ্কট হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

কিশোরগঞ্জ জেলা বিএফএ এর সভাপতি নাদিরুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, ৪ জেলার (কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ) ৪৫ জন সার ডিলার দীর্ঘ ৬ মাস যাবৎ পাওনা সার না পেয়ে আর্থিক ও ব্যবসায়িকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থসহ মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন। তিনি বলেন, অনেক ডিলার ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বা স্বল্প পুঁজিতে সারের ব্যবসা করছে। ফলে ডিলারদের ব্যাংক সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে।

গাজীপুর জেলার বিএফএ সভাপতি হাজী আব্দুল কাদির বলেন, গুদাম রক্ষক সার চুরি করেছে। এতে আমাদের ডিলারদের অপরাধ হতে পারে না। তাই তাদের পাওনা সার অবিলম্বে সরবরাহ দেওয়া হোক।

মুন্সিগঞ্জ জেলার বিএফএ সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল খায়ের জানান, বার বার ডিলাররা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন নিবেদন ও ধরনা দিলেও ডিলারদের পাওনা সার এখনো সরবরাহ না দেওয়ায় তারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

আসাদুজ্জামান ফারুক/এসএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।