কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, বাড়ছে ভাঙন

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ০৩:৪২ পিএম, ১৫ জুলাই ২০১৭

কুড়িগ্রামে কমতে শুরু করেছে সবকটি নদ-নদীর পানি। এর ফলে দেখা দিয়েছে ভাঙন। এখনো নিম্নাঞ্চলে পানি থাকায় কর্মজীবী লোকজন কর্মহীন হয়ে পড়েছে। ধরলা, তিস্তাসহ সবকটি নদ-নদীর পানি কমলেও চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। গত দুইদিনে রাজীবপুরের কোদালকাটি, রাজারহাটের বিদ্যানন্দ, চিলমারীর নয়ারহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙনে আরও দুই শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়েছে। বিশুদ্ধ পানি, শিশু খাদ্য সংকটের পাশাপাশি পশুখাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

সদর উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন মাস্টার জানান, ধরলা নদীতে পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তর নওয়াবশ ও দক্ষিণ কদমতলা গ্রামের প্রায় ২৫টি বাড়ি স্থানান্তরিত হয়েছে।

এই ইউনিয়নের সর্দার পাড়া গ্রামের কৃষক কাচু মিয়া (৪৫) বলেন, ‘গরু-ছাগল বিক্রি করে ৬০ হাজার টাকা খরচ করি ২ বিঘা জমিত পটল লাগাইছি। ৩০/৩৫ হাজার টাকার পটল বিক্রি করতে পারছি। এর মধ্যে বন্যা আসি সব শেষ করি দিছে।’

একই কথা জানালেন হোসেন আলী (৫৬)। তারও ২৪ শতক জমির পটলখেতের একই অবস্থা।

সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর যাত্রাপুর গ্রামের আবুল হোসেন ও আজিজ বলেন, ‘আমরা কামলা মানুষ। হাতের কাজের উপর দিন চালাই। চারদিকে পানি থাকায় এক সপ্তাহ ধরি কাজ-কাম নাই। রিকশাও চালাবার পারি না। ধারকর্জ করি চলছি।’

অপরদিকে রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ও কোদালকাটি ইউনিয়নে ব্রহ্মপূত্রের পানি স্থিতিশীল থাকায় ভাঙনের গতি কমে গেছে। কোদালকাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির জানান, এবার ভাঙনে এই ইউনিয়নের এক হাজার ৬৬০টি বাড়ি ভেঙে গেছে।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান জানান, নদ-নদীর পানি কমে যাওয়ায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বন্যা কবলিত পরিবারের তালিকা করা হচ্ছে। চাহিদা মোতাবেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।

এদিকে বন্যা পরস্থিতি দেখতে আগামীকাল রোববার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া কুড়িগ্রাম যাচ্ছেন। তিনি উলিপুর ও চিলমারী উপজেলায় দুর্গত এলাকা পরিদর্শন ও এক হাজার পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করবেন বলে জানা গেছে।

নাজমুল হোসাইন/আরএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।