ঠাকুরগাঁওয়ে গাড়িতে আগুন, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক ঠাকুরগাঁও
প্রকাশিত: ০৪:৩২ পিএম, ১২ জুলাই ২০১৭

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সজিব দত্তের ছুরিকাঘাতে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মান্নান খুনের মূলহোতাদের গ্রেফতারের দাবিতে বালিয়াডাঙ্গি মহাসড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধরা।

বুধবার বিকেল ৪টা থেকে মহাসড়ক অবরোধ শুরু করে এলাকাবাসী। এ সময় পুলিশের সাথে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর কয়েকদফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

অবরোধকারীরা রাস্তায় ব্যারিকেট দিয়ে গাছের গুঁড়ি ফেলে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী একটি মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে ও আগুন ধরিয়ে দেয়।

পরে বিক্ষুব্ধ জনতা আরও গাড়ি ভাঙচুর শুরু করলে পুলিশ বাধা দেয় এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ১০ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।

এতে করে ঠাকুরগাঁও জেলার সাথে ৪ উপজেলার যানচলার বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রী ও সাধারণ মানুষ।

অবরোধস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হলেও বিক্ষুব্ধ জনতাকে সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। 

বুধবার বিকেলে নিহত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুল মান্নানের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে নিজ এলাকায় পৌঁছালে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এলাকার সাধারণ মানুষ।

উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সজীব দত্তের সঙ্গে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের অর্থ-বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মান্নানের টেন্ডার ও টোল আদায় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল।

কয়েকদিন আগে সিগারেট খাওয়াকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ সময় যুবলীগ নেতা সজীব দত্ত মান্নানকে পরে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

পরবর্তীতে আব্দুল মান্নান সজীব দত্তের বড় ভাই জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দত্তকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি তার ভাইয়ের পক্ষ নিয়ে কথা বলে ও মান্নানকে সাবধান করে দেন বলে ওই সময় উপস্থিত অনেকে বলেছেন।

ওই ঘটনার জের ধরে যুবলীগ নেতা সজীব দত্ত মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় আব্দুল মান্নানকে শহরের মুন্সিরহাট এলাকায় দেখে পেছন থেকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন।

একপর্যায়ে মান্নান মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় আব্দুল মান্নানকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে এলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জুম্মনকে সজীব দত্ত ছুরিকাঘাত করে মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যান।

স্থানীয় লোকজন আব্দুল মান্নান ও জুম্মনকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে আনার পথে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে পথিমধ্যে মান্নান মারা যান। আর জুম্মনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

খুনের সঙ্গে জড়িতের অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা সজীব দত্তের বড় ভাই জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দত্ত সমীর পলাতক। সমীর দত্তের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল ও পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ হতাহতদের খোঁজ নিতে গিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের আশ্বাস দেন।

মো: রবিউল এহসান রিপন/এএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।