ভারি বৃষ্টিতে রাজশাহী নগরীতে জলাবদ্ধতা
ভারি বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে রাজশাহী নগরজুড়ে। মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে থেমে থেমে নামছে ঝুম বৃষ্টি। বুধবার বেলা ১টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১১৪ দশমিক ৪ মিলিমিটার।
আবহাওয়া অফিসের ভাষ্য, এটিই এ মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। দেশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে।
ভারি বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে নগরীর নিচু এলাকাগুলো। দেখা দিয়েছে চরম দুর্ভোগ। মেঘের আড়ালে ঢাকা পড়েছে সূর্যের। মাঝে মধ্যে রয়েছে মেঘের গর্জন। তারপর বৃষ্টি।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের সহকারী আনোয়ারা বেগম জানান, মঙ্গলবার রাত ১টা ২০ মিনিট থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে রাজশাহীতে। বেলা ১টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় ১১৪ দশমিক ৪ মিলিমিটার। এটিই এ মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় এই বৃষ্টিপাত।
এদিকে, জলাবদ্ধতায় শুধু রাস্তাঘাট নয়, ডুবে গেছে বাড়ি-ঘরসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও। আর এ জন্য নগরবাসী সিটি কর্পোরেশনের অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থাকেই দায়ী করেছেন। বৃষ্টিতে নগরীর সাহেববাজার, মিয়াপাড়া, রানীবাজার, গনকপাড়া, শালবাগান, উপশহর, স্টেডিয়াম এলাকা, কোর্ট এলাকা, লক্ষ্মীপুর, মহিষবাথান, ভাটাপাড়া, চন্ডিপুর, হেলেনাবাদ কলোনী, বুলনপুর, হড়গ্রাম, ছোটবনগ্রাম, সপুরাসহ নিচু এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানি উঠেছে বাসাবাড়ি-অফিসে। এতে দুর্ভোগের অন্ত নেই। দুপুরের পর থেকে বৃষ্টিপাত কমলেও দুর্বল নিষ্কাশন ব্যবস্থায় নামছে না পানি।
নগরীর সাহেববাজার এলাকার ফুটপাতের ব্যবসায়ী শাহ আলম জানান, ভারি বৃষ্টির কারণে তারা দুপুর পর্যন্ত দোকান খুলতে পারেননি। সকাল থেকেই ছিল জলাবদ্ধতা, রাস্তায় হাঁটুপানি। যানবাহন চলাচল নেই বললেই চলে। নেই লোকজনও।
নগরীর অভিজাত এলাকা উপশহরের বাসিন্দা ওয়ালিউর রহমান জানান, ভারি বৃষ্টিতে হলেই এমন জলমগ্ন হয়ে পড়ছে উপশহর। এ জন্য সিটি কর্পোরেশনই দায়ী। কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ যদি সঠিক সময়ে ড্রেনগুলো পরিষ্কার ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার সঠিক পরিকল্পনা করতো, তাহলে এ দুর্দশা হতো না।
নগরীর মহিষবাথান এলাকার আসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রের প্রকল্প দফতরে উঠেছে পানি। প্রতিষ্ঠানটির প্রকল্প কর্মকর্তা আব্দুলাহ আল রেজা জানান, সকালে তারা দফতরে এসে দেখেন হাঁটু পানি। আসবাবপত্র ডুবে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ও মালামাল। পানি না নামায় কাজ করতে পারছেন না তারা।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিবছরই বর্ষার আগে নগরীর নিষ্কাশন নালাগুলা পরিষ্কার করে রাসিক। এবারও কয়েকজন ক্ষমতাশীন দলের নেতা টেন্ডারের মাধ্যমে এ কাজ করেছেন। তবে এবার পুরো কাজ হয়েছে লোকদেখানো। অথচ বিল নেয়া হয়েছে পুরোটাই।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এএম/জেআইএম