যৌতুক না পেয়ে ঘুমন্ত স্ত্রীকে কোপালো স্বামী
যৌতুকের টাকা না পাওয়ায় যশোরে এক গৃহবধূকে ঘুমন্ত অবস্থায় কুপিয়েছে তার স্বামী ও স্বজনরা। বুধবার ভোরে যশোর সদর উপজেলার রূপদিয়া খানপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ নাসিমা বেগম (২৭) তিনি রূপদিয়া খানপাড়ার জামাল খানের স্ত্রী এবং একই উপজেলার হাটবিলা গ্রামের হাসান হাওলাদারের মেয়ে।
এই ঘটনার পর নাসিমাকে সকালে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী, দেবর, শ্বশুর ও শাশুড়িকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় বুধবার ভোরে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও দেবর মিলে ঘরের লাইট বন্ধ করে ধারালো গাছি দা দিয়ে নাসিমাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এক পর্যায়ে তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসেন। এ সময় দৌঁড়ে পাশের বাড়ি আশ্রয় নেন নাসিমা।
খবর পেয়ে ভাই মহিদ হাওলাদারসহ অন্যরা ছুটে এসে নরেন্দ্রপুর পুলিশকে অবহিত করেন। পরে পুলিশের সহযোগিতায় নাসিমাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার মাথা, গলা, হাতে, মুখসহ বিভিন্নস্থানে ক্ষত চিহ্ণ রয়েছে।
নির্যাতিত নাসিমার ভাই মহিদ হাওলাদার জানান, বিদেশে যাওয়ার জন্য তার ভগ্নিপতি জামাল খান যৌতুক হিসেবে এক লাখ টাকা দাবি করেন। বোনের সুখের জন্য তারা দিতেও চেয়েছিলেন। তবে শর্ত ছিলো বিদেশের ভিসা ও অন্যান্য কাগজপত্র এলে ওই টাকা দেয়া হবে। কিন্তু তার আগেই টাকা না পেয়ে নাসিমার উপর নির্যাতন চালাতে থাকেন জামাল খান।
তিনি আরো বলেন, গত ২৫ দিন আগে নাসিমাকে বৈদ্যুতিক শক দেয়া হয়। এ নিয়ে স্থানীয় নরেন্দ্রপুর ফাঁড়ির পুলিশ নির্যাতিত নাসিমার স্বামী, শ্বশুর, দেবরকে ধরে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন সালিশ বৈঠক করে মিমাংসা করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে আনেন। এই সালিশ বৈঠক ২১ মে হওয়ার কথা ছিলো। তার আগের দিন ২০ মে ভোরে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় স্বামী জামাল খান, শ্বশুর গফফার খান, দেবর জব্বার খান ও শাশুড়ি মনোয়ারা বেগমের নামে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন নাসিমার ভাই মহিদ হাওলাদার।
নরেন্দ্রপুর পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই বিল্লাল হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, যৌতুকসহ পারিবারিক গোলযোগের জের ধরে গৃহবধূকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়েছে স্বামী ও তার স্বজনরা। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার আগেই অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিকদার আক্কাস আলী জানান, এ ঘটনায় চারজনের নামে মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
মিলন রহমান/এসকেডি/আরএস/আরআইপি