আদমজী জুট মিল বন্ধের ১৫ বছর আজ


প্রকাশিত: ০৭:৫৪ এএম, ৩০ জুন ২০১৭
ফাইল ছবি

এশিয়ার বৃহত্তম জুট মিল আদমজী বন্ধ হওয়ার ১৫ বছর আজ। ক্রমাগত লোকসানের কারণে প্রতিষ্ঠার ৫২ বছরের পর ২০০২ সালের ৩০ জুন বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল এশিয়ার বৃহত্তম এই পাটকল। তারপর সেখানে গড়ে তোলা হয় আদমজী রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল বা আদমজী ইপিজেড। ২০০৬ সালের ৬ মার্চ এর আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।

সেই থেকে এই ইপিজেডে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে একে একে গড়ে উঠছে রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান। ক্রমশঃ বাড়ছে বিনিয়োগ। সেই সঙ্গে বাড়ছে রফতানিও। হচ্ছে নতুন-নতুন কর্মসংস্থান।

আদমজী ইপিজেড প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত এ ইপিজেডে বিনিয়োগ হয়েছে ৪১১ দশমিক ৪৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ঠিক একই সময়ে বিদেশে রফতানি হয়েছে ২ হাজার ৭১৬ দশমিক ৯১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য। এ পর্যন্ত এখানে কর্মসংস্থান হয়েছে ৫৩ হাজার ১১৮ জনের।

এ ইপিজেডে সাংবাদিকদের প্রবেশে অনেক কড়াকড়ি, বিধ-নিষেধ থাকলেও সন্ত্রাসী, বিভিন্ন মামলার আসামীরা প্রবেশ করে অনায়েসে। অভিযোগ রয়েছে, ইপিজেডে সন্ত্রাসীরা প্রবেশ করে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের হুমকিও দিয়ে থাকে ব্যবসার জন্য। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে এক ব্যবসায়ী সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি জিডিও করেছেন।

আদমজী ইপিজেড সূত্রমতে, বন্ধ হয়ে যাওয়া আদমজী পাটকলের ২৪৫ দশমিক ১২ একর জমির ওপর আদমজী ইপিজেড স্থাপিত হয়েছে। এ ইপিজেডের মোট প্লটের সংখ্যা ২২৯টি।

বেপজার মহা-ব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) নাজমা বিনতে আলমগীর জানান, এ পর্যন্ত এ ইপিজেডের ৫০টি শিল্প প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে রয়েছে। যার মধ্যে ২৭টি বিদেশি, ১৩টি যৌথ মালিকানাধীন ও ১০টি বাংলাদেশি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও নির্মাণাধানী রয়েছে ১৬ টি শিল্প প্রতিষ্ঠান।

তৎকালীন পাকিস্তানের ২২ ধনাঢ্য পরিবারের অন্যতম আদমজী পরিবারের তিন ভাই ওয়াহেদ আদমজী ওরফে দাউদ আদমজী, জাকারিয়া আদমজী ও গুল মোহাম্মদ যৌথভাবে ১৯৫০ সালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ২৯৪ দশমিক ৮৮ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠা করেন আদমজী জুট মিলস। ১৯৫১ সালের ১২ ডিসেম্বর ১৭০০ হেসিয়ান ও ১০০০ সেকিং লুম দিয়ে এই মিলের উৎপাদন শুরু হয়।

একের পর এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অজ্ঞাত সংখ্যক মানুষের জীবন যায়। এসব কারণে মিলটি লোকসান গুনতে গুনতে বন্ধের উপক্রম হয়। এক পর্যায়ে বিগত ৪ দলীয় জোট সরকার চরম ঝুঁকি থাকা সত্বেও ২০০২ সালে মিলটি বন্ধ ঘোষণা করে শ্রমিকদের সকল পাওনা পরিশোধ করে দেন। পরবর্তীতে সেখানে ইপিজেড প্রতিষ্ঠা করা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ জুট মিল বন্ধ করার পরও ইপিজেড নির্মাণের সময় পর্যন্ত স্থানীয় একাধিক সিন্ডিকেট মিলের মূল্যবান যন্ত্রাংশ, লোহা, তামা ও বৈদ্যুতিক তারসহ কয়েক শ’ কোটি টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। কিন্তু এর হোতাদের কোনো বিচার হয়নি। সন্ত্রাস ও লোকসানের অজুহাতে মিল বন্ধ হলেও সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজদের শাস্তি দেয়া হয়নি অদ্যবধি।

হোসেন চিশতী সিপলু/এমএমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।