কোয়েল পাখির খামারে স্বাবলম্বী


প্রকাশিত: ০৬:০৪ এএম, ১৭ মে ২০১৫

মাগুরা সদর উপজেলার নালিয়ারডাঙ্গি গ্রামে কোয়েল পাখির খামার করে স্বাবলম্বী হয়েছেন একই পরিবারের ৩ জন। তাদের খামারের ডিম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। অন্যদিকে, কোয়েল পাখির মাংস সুস্বাদু ও পুষ্টিকর হওয়ায় প্রতি মাসেই হাজার জোড়া কোয়েল পাখির বাচ্চা বিক্রি করছেন বিভিন্ন ছোটখাট খামারিসহ ভোজন রসিক ক্রেতাদের কাছে। তবে অর্থনৈতিক কারণে খামারটি আর বড় করা সম্ভব হচ্ছে না।

গ্রামের অনেক বেকার যুবক খামারটিতে কাজ করে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠেছেন। কেউ কেউ আবার সকালে এসে বিকেলে বাড়ি ফেরেন। আর খামারের মালিক রেজাউল ইসলাম (মন্টু) ও তার দুই ভাই তাদের খামারে সময় দিয়েই নিজেদের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটিয়েছেন।

পাইকাররা জানান, খামারটি থেকে উৎপাদিত ডিমের আকার ভালো হওয়ায় বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকাররা ভিড় জমান নালিয়ারডাঙ্গি গ্রামে। আবার ডিমের আকার-আকৃতি ভালো হওয়ায় বিক্রেতারা ডিম বিক্রি করে লাভও ভালো পান।

ওই গ্রামের ভ্যানচালক রহমান শেখ জাগো নিউজকে জানান, আড়াই একর (২৫০ শতক) জমির উপর নির্মিত খামারটিতে গ্রামের ১৪/১৫ জন বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। খেয়ে-পড়ে বেশ ভালোই আছে বেশ কয়েকটি পরিবার। এছাড়া অনেক ভ্যানচালকও এখানে কাজ করছেন এলাকার এই খামারটিতে। তিনি আরো জানান, প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ (২০০টাকা) পাওয়ায় মানুষ পরিবহণ করা বাদ দিয়ে নেমে পড়েছেন এ কাজে।

খামারের মালিক রেজাউল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, ১৯৯৬ সালে প্রথম পোল্ট্রি ও লেয়ারের ব্যবসা শুরু করলে তাতে অর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হই। পরে ২০০১ সালে যুব উন্নয়ন থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। এরপর নতুন করে শুরু করি কোয়েল পাখির চাষ। সেই থেকেই্ আমি এখন পর্যন্ত এ ব্যবসা ধরে রেখেছি এবং লাভবান হচ্ছি। বাড়ি-ঘর, জায়গা-জমি থেকে শুরু করে কিনেছি চাষের ৩টি ট্রাক্টর।

পোল্ট্রি ও লেয়ারের চেয়ে কোয়েল পাখির খামারে ঝুুঁকি কম ও লাভ বেশি হওয়ায় স্থানীয় অনেকেই এখন কোয়েল পাখির খামার তৈরির কথা ভাবছেন। এছাড়া শ্রীপুর উপজেলায়ও ১টি খামার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে জানান এলকার যুবকরা।

রেজাউল ইসলামের বাবা মোজাহার আলী জাগো নিউজকে জানান, তার তিন ছেলে লেখাপড়ায় বেশি দূর এগোতে না পেরে এ ব্যাবসা শুরু করে। এখন তাদের উপার্জিত টাকায় পুরো সংসার চলে।

মাগুরা জেলা লাইভ স্টক অফিসার ডা. শ্যামল কুমার পাল জাগো নিউজকে জানান, বাজার ব্যবস্থার উন্নয়নসহ যদি এসব ছোট খামারিদের সহজ শর্তে  অথবা সুদ মুক্ত ঋণ প্রদান করা যায় তাহলে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক সাড়া পড়বে। এছাড়া তিনি ক্ষুদ্র ঋণ পরিচালনার জন্য উদ্যোগী হবারও আহ্বান জানান সংশ্লিষ্টদের কাছে।

মো. আরাফাত হোসেন/এমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।