ধসে পড়তে পারে চট্টগ্রাম শহরের পাহাড়গুলোও


প্রকাশিত: ১২:৪৪ পিএম, ১৩ জুন ২০১৭

চট্টগ্রামের তিন জেলায় পাহাড় ধসের ঘটনায় আলোড়ন সৃষ্টি হলেও নগরে এখনো পর্যন্ত তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। পাহাড়ের পাদদেশে নির্মিত বাড়ির দেয়াল ধসে এ পর্যন্ত এক ব্যক্তির নিহতের ঘটনা ঘটে। তবে চট্টগ্রাম মহানগরেও ব্যাপক পাহাড় ধসের অশনি সংকেত দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস বলছে, গত তিনদিনের টানা বর্ষণে চট্টগ্রাম মহানগরীর সবকটি পাহাড়ের কিয়দংশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। চট্টগ্রামে আজও ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে যেকোনো সময় চট্টগ্রাম শহরের পাহাড়গুলোতেও ভয়াবহ ধস হতে পারে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক জিল্লুর রহমান চৌধুরী জানান, চট্টগ্রাম মহানগরীতেই সবচেয়ে পাহাড় ধসের ঝুঁকি বেশি। তাই ঘূর্ণিঝড় মোরা’র আগে থেকেই চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিতে থাকা শত শত বসতি সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ফলে চট্টগ্রামে পাহাড় ধস হলেও মৃতের ঘটনা ঘটেনি।

একইভাবে গত রোববার মধ্যরাত থেকে লঘুচাপের প্রভাবে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হয়। এতেও নগরীর অনেক জায়গায় পাহাড় ধসে পড়েছে। কিন্তু প্রাণহানি থেকে রক্ষা পেয়েছে সরিয়ে নেয়া মানুষ।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের তিন জেলায় আজ মঙ্গলবার ভোর থেকে একের পর এক পাহাড় ধসের খবর আসছে। এতে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৭৪ জন ছাড়িয়ে গেছে। বাড়তে পারে আরও মৃতের সংখ্যা। এ অবস্থায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন নগরীর পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি নিয়ে আরও তৎপর হয়ে উঠেছে।

আবহাওয়া অফিসের পাহাড় ধসের সতর্কতা জারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনদিনের বৃষ্টিতে পাহাড়ের মাটি এমনিতেই নড়বড়ে হয়ে উঠবে। এ পর্যন্ত নগরীর চশমাহিল, অক্সিজেন ও বায়েজিদ এলাকাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে কিছু পাহাড়ে ফাটলও সৃষ্টি হয়েছে। যা পাহাড় ধসের অশনি সংকেত। ফলে এসব পাহাড়ের কোথাও ঝুঁকিপূর্ণ কোনো বসতি বা পাহাড় আছে কিনা তা যাচাই করতে জেলা প্রশাসনের টিম কাজ করছে।

এদিকে চট্টগ্রাম পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াদি মো. ফরিদ উদ্দিন জানান, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্মচাপটি উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে সিলেট ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপ রূপে অবস্থান করছে।

এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে যেতে পারে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় বিরাজ করছে।

মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

সেই সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। ফলে চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে বলে জানান ফরিদ উদ্দিন।

এএম/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।