ওয়েবসাইট তৈরি করায় স্কুলছাত্রকে হ্যাকারদের হুমকি


প্রকাশিত: ০৬:১৯ এএম, ১০ জুন ২০১৭

ঝিনাইদহে পোস্টটাচ.কম নামে ফেসবুকের ন্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তৈরি করেছে আবরার নুর অর্ণব নামে ৭ম শ্রেণির এক ছাত্র। ওয়েবসাইটটি তৈরি করার পর কয়েক বার হ্যাক করে হ্যাকাররা। তবে ওয়েবসাইটটি পুরোটা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারায় ওই স্কুলছাত্রকে মোবাইলে প্রতি মুহূর্তে ক্ষুদে বার্তা দিয়ে হত্যার হুমকি দিচ্ছে হ্যাকাররা। নিরাপত্তার আশঙ্কায় প্রায় এক সপ্তাহ বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না স্কুলছাত্র অর্ণব ও তার পরিবার।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র অর্ণব। তার বাবা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা। থাকেন শহরের ব্যাপারীপাড়ার একটি ভাড়া বাড়িতে। ৫ম শ্রেণিতে পড়ার সময় সে কম্পিউটার চালানো শুরু করে। ইতিমধ্যে অর্ণব ওয়েবসাইট নির্মাণসহ কম্পিউটারের নানা বিষয় শিখেছে।

ornob

১৬ ডিসেম্বর থেকে সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নতুন ওয়েবসাইট তৈরির কাজ শুরু করে। ১৮ এপ্রিল সে সফল হয়। নাম দেয় পোস্টটাচ.কম (posttouch.com)। নিজস্ব ডোমেইন কিনে চালু করে সাইটটি। ৬৪ জন তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাউন্ট খোলে। তৈরি করে পোস্টটাচ নামে অ্যাপ। তার এই সাফল্য চোখে পড়ে হ্যাকারদের।

গত ২২ মে প্রথম তার ওয়েবসাইট পোস্টটাচ হ্যাক করা হয়। অনেক চেষ্টার পর তা উদ্ধার করা হয়। আবারো হ্যাকড হয়। সর্বশেষ হ্যাকাররা এসকিউএল ইনজেকশান পুশ করে সব কিছু নষ্ট করে দেয়। এতেও দমেনি অর্ণব। নতুন করে আবারো শুরু করে ওয়েবসাইটির কাজ।

তবে বসে নেই হ্যাকাররা। অর্ণবের বাবা আব্দুল আলিমের মোবাইল ফোনে মুহূর্তে মুহূর্তে ক্ষুদে বার্তা দিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে তারা। বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে জানানো হলে বাড়িতে পুলিশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবুও আতঙ্কিত অর্ণব ও তার পরিবার। বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না পরিবারের লোকজন। বন্ধ রয়েছে অর্ণবের লেখাপড়া। অর্ণবের বাড়িতে কে বা কারা কখন আসছেন বা কখন যাচ্ছেন তা মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা দিয়ে জানাচ্ছেন হ্যাকাররা। আর নিয়মিত চলছে হত্যার হুমকি। এমনকি সংবাদকর্মীদের যাওয়া ও আসার বিষয়েও ম্যাসেজ দিতে দেখা গেছে।

ornob

অর্ণবের বাবা আব্দুল আলিম বলেন, এ ঘটনার পর থেকে আমার পরিবার নিয়ে চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। দ্রুত হত্যার হুমকিদাতা ও হ্যাকারদের আইনের আওতায় এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে।

এ ব্যাপারে সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক শেখ বলেন, এ ঘটনায় অর্ণবের বাবা একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক জাকির হোসেন জানান, বিষয়টি জানার পর থেকে তিনি অর্ণবের ও তার পরিবারে সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন। এছাড়াও ব্যক্তিগতভাবে তিনি সবসময় খোঁজ খবর রাখছেন।

আহমেদ নাসিম আনসারী/আরএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।