সাড়ে ৭ মাস এক কাপড়েই ছিলেন ডা. ইকবাল


প্রকাশিত: ০২:১৮ পিএম, ০২ জুন ২০১৭

ঢাকা সাইন্স ল্যাবরেটরি এলাকা থেকে অপহৃত ডা. মুহাম্মদ ইকবাল মাহমুদ লক্ষ্মীপুরের বাসায় এখন স্বজন-শুভাকাঙ্গীদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। এসময় বিভিন্নজন দুঃসহ সময়গুলোর কথা জানতে চাইছেন।

শুক্রবার বিকেলে ডা. ইকবাল জাগো নিউজকে বলেন, টানা ৭ মাস ১৭ দিন তাকে একটি রুমের মধ্যে একটি টি-শার্ট আর প্যান্ট পড়ে থাকতে হয়েছে বন্দিদশায়। এসময় তার চোখ ও পেছন থেকে হাত বেঁধে রাখা হতো। খালি ফ্লোরের মধ্যেই রাত্রীযাপন করতে হতো। এছাড়া খাবার, নামাজের অজু ও নামাজ পড়তে কিছু সময়ের জন্য হাতের বাঁধ খুলে দেয়া হতো। তবে কে বা কারা, কী কারণে তাকে অপহরণ করেছে- সে সর্ম্পকে নিশ্চিতভাবে কিছুই বলেননি তিনি।

বুধবার রাত সোয়া ১১ টার দিকে ডা. ইকবাল লক্ষ্মীপুর হাসপাতাল সড়কের বাসায় ফিরেন। এরআগে রাত ১১টার দিকে রায়পুর-লক্ষ্মীপুর সড়কের নতুন গো-হাটা এলাকায় কে বা কারা একটি মাইক্রোবাস থেকে তাকে চোখ বাধাঁ অবস্থায় ফেলে যায়। পরে তিনি একটি অটোরিকশা করে বাসায় ফেরেন।

২৮ তম বিসিএস পাস করা ইকবাল মাহমুদ লক্ষ্মীপুর শহরের হাসপাতাল সড়কের মুক্তিযোদ্ধা একেএম নুরুল আলমের ছেলে। তিনি মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিকিৎসক হিসেববে কর্মকর্তা ছিলেন।

অপহরণের পর সুস্থ অবস্থায় ইকবালকে ফিরে পেতে পরিবারের পক্ষ থেকে লক্ষ্মীপুর ও ঢাকায় তিনবার সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছিল।

এছাড়া গত বছরের ২০ নভেম্বর ইকবালের বাবা হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করে তাকে উদ্ধারের দাবি জানায়। ডা. ইকবাল মাহমুদকে উদ্ধারে নিষ্ক্রিয়তা কেন কর্তব্যে অবহেলা হিসেবে গণ্য হবে না, তা জানতে চেয়েও রুল দিয়েছিল আদালত। সে সময় স্বরাষ্ট্র সচিব ও আইজিপিসহ সংশ্লিষ্ট ১০ জনকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৪ অক্টোবর রাত ১০ টার দিকে ইকবাল লক্ষ্মীপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া রয়েল কোচে ঢাকায় রওয়ানা হন। তিনি ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যানেসথেশিয়ার উপর দুই মাসের প্রশিক্ষণের জন্য যাচ্ছিলেন। রাত ৩টা ১০ মিনিটের দিকে ঢাকার সাইন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় বাস থামলে তিনি নামেন।

সেখানে সিসি ক্যামেরায় ধারন হওয়া একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বাস থেকে নামার পর অজ্ঞাত ৭-৮ ব্যক্তি ইকবালকে ঘিরে কথা বলছেন। এরপর তাকে দ্রুত একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেয়া হয়। এর পেছন দিয়ে পুলিশের একটি পিকআপভ্যান যেতে দেখা যায়। এ ঘটনায় ১৬ অক্টোবর রাতে ধানমন্ডি থানায় মামলা দায়ের করেন তার বাবা।

প্রসঙ্গত, ইকবাল লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে যোগদান করেন। সেখান থেকে তিনি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে বদলি হন। তার স্ত্রী সোহাদা ইয়াছমিন পেশায় ডাক্তার। তিনি লক্ষ্মীপুরে থাকেন। তাদের সংসারে আরমান আহসান আরজ (৮) ও আয়েশা (৪) নামের দুই সন্তান রয়েছে।

কাজল কায়েস/এমএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।