সন্তান প্রসব নয়, টয়লেটে গর্ভপাত ঘটেছে নারী শ্রমিকের
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার হরিণহাটি এলাকায় অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার কারখানার নারী শ্রমিক হামিদা আক্তারের (২০) টয়লেটে সন্তান প্রসবের সংবাদ প্রচারিত হওয়ায় তোলপাড় হয়েছে বিভিন্ন মহলে। কিন্তু সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে এবং ওই নারী শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেদিন টয়লেটে সন্তান প্রসব নয়, বরং তার গর্ভপাতের ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় কারখানার পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে কারখানার জেনারেল ম্যানেজার (প্ল্যানিং) হারুন অর রশীদকে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন, জেনারেল ম্যানেজার (ম্যানুফ্যাক্চারিং) ফজলুল বাকী ও জেনারেল ম্যানেজার (মানব সম্পদ) সিরাজুল করিম।
তদন্ত কমিটি সোমবার ঢাকায় তাদের প্রধান কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
এদিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামিদা আক্তার গত বছরের ২১ এপ্রিল থেকে ষোল সপ্তাহ মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষে ওই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর কারখানার লাস্টিং সেকশনে কাজ করেন। হাবিবুর রহমান নামে ৯ মাস বয়সি তার আরো একটি সন্তান আছে।
কর্তৃপক্ষ আরো জানায়, গত শনিবার দুপুরে কারখানায় কর্মরত অবস্থায় হঠাৎ পেটব্যথা শুরু হয় হামিদার। পরে তিনি তার সুপারভাইজার রতন মিয়াকে বিষয়টি জানান। সপুারভাইজার তাকে কারখানার হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর হামিদা হাসপাতালে গিয়ে নার্স রেখার সঙ্গে দেখা করে ওষুধ নিয়ে খাওয়ার আগে টয়লেটে যান। সেখানেই তার গর্ভপাত ঘটে এবং অজ্ঞান হয়ে পড়েন। হামিদা অন্তঃসত্ত্বা থাকায় ইতোপূর্বে তিনি গর্ভপাতের জন্য ৩টি ট্যাবলেট খাওয়ার কারণে এ অবস্থা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ খবর পেয়ে সহকর্মী ও কর্তৃপক্ষ তাকে উদ্ধার করে উপজেলার সফিপুর মডার্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।
হামিদা জানায়, স্বামীর সাথে অভিমান করে গত কয়েকদিন আগে তিনি স্থানীয় একটি ফার্মেসি থেকে গর্ভপাতের ওষুধ সেবন করেন।
তিনি বলেন, গত শনিবার দুপরে কারখানায় কর্মরত অবস্থায় আমার পেটব্যথা শুরু হলে আমি সুপারভাইজারকে জানাই। তিনি আমাকে কারখানার নিজস্ব ডাক্তারের কাছে যেতে বলেন। কারখানার হাসপাতালে গিয়ে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার আগেই নার্সের সঙ্গে কথা বললে তিনি পেটব্যথার ওষুধ দেন। ওই ওষুধ সেবনের আগেই টয়লেটে গেলে আমার গর্ভপাত ঘটে।
এ ব্যাপারে কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আব্দুল আজিজ জাগো নিউজকে জানান, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার কারখানার নারী শ্রমিকের সন্তান প্রসব নয়, তিনি নিজে ওষুধ খেয়ে গর্ভপাত ঘটিয়েছেন। তাকে কারখানা থেকে গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর মাতৃত্বকালীন ২৬ হাজার ৩৩৬ টাকা প্রদান করা হয়েছে। তারপরও কারখানার অর্থায়নে ওই শ্রমিকের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া ওই দিন হামিদা কোনো ছুটি চাননি।
আমিনুল ইসলাম/এমএএস/আরআইপি/এসআরজে