নরসিংদীতে দু`দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, পুলিশ সদস্য অপহরণ


প্রকাশিত: ০৩:৩৭ পিএম, ২৬ মে ২০১৭

নরসিংদীর দুর্গম চরাঞ্চল বাঁশগাড়ীতে পুলিশ ও গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩ পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। এসময় উত্তেজিত গ্রামবাসী ৩ পুলিশ সদস্যকে আটক করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় পুলিশ ১০ গ্রামবাসীকে আটক করেছে বলে জানা গেছে। তবে এদের মধ্যে গ্রামবাসী এক পুলিশ সদস্যকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হাসিবুল আলম।

শুক্রবার সন্ধায় রায়পুরা থানা পুলিশ ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে গেলে আওয়ামী লীগ নেতা শাহেদ সরকার সমর্থিত গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। এই ঘটনার পর থেকে এলাকাটিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে নদী ও সড়কপথে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

নিবাচনী সহিংসতা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নরসিংদীর চরাঞ্চল বাঁশগাড়ীতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাকে চেয়ারম্যান শাহেদ সরকার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সিরাজুল হকের সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এরই জের ধরে চলতি ৮ মে দুইপক্ষের রক্তক্ষয়ী টেঁটা ও বন্ধুকযুদ্ধে ২ জন নিহত হয়। এছাড়া গত কয়েক মাসব্যাপী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৭ জন নিহত হয়। আহত হয় কমপক্ষে দুই শতাধিক গ্রামবাসী। নিহত ৫ জন সাবেক চেয়ারম্যান সাহেদ সরকারের সমর্থক। অপর দুইজন বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল হকের সমর্থক। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ এক অপরের বিরুদ্ধে পাল্টা-পাল্টি মামলা দায়ের করেন।

এরই জের ধরে আজ শুক্রবার রায়পুরা থানা পুলিশ ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে বাশগাড়ী এলাকায় অভিযান চালায়। ওই সময় পুলিশ সাহেদ সমর্থক রুপু মেম্বার ও আজিম মিয়াসহ ৪ জনকে আটক করে। এতে উত্তেজিত হয়ে যায় গ্রামবাসী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গ্রামবাসীর উপর লাঠি চার্জ করেন। পরে উত্তেজিত জনতা সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায়। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে তিন পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়।

এদিকে রুপু মেম্বার ও আজিম মিয়াসহ ৪ জনকে আটকের প্রতিবাদে গ্রামবাসী ৩ পুলিশ সদস্য আটক করে নিয়ে যায়। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুই পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে। এ রিপোর্ট লেখা পযর্ন্ত অপর এক পুলিশ সদস্যকে উদ্ধারে অভিযান চালানো হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি এলাকায় দাঙ্গা পুলিশ মোতায়ের করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় বাঁশগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন বাশগাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান সাহেদ সরকার। কিন্তু নির্বাচনে স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর পছন্দের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সিরাজুল হক চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। এরপর থেকে দুইপক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হাসিবুল আলম বলেন, আধিপত্ব বিস্তারের জের ধরেই বার বার এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজকে আসামি ধরতে গেলে গ্রামবাসী পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক পুলিশ সদস্যকে অপহরণ করে নিয়ে য়ায়। তাকে উদ্ধারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডিএসপি সফিউর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের বিশষ টিম অভিযান পরিচালনা করছে।

সঞ্জিত সাহা/এমএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।