সেই শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা


প্রকাশিত: ০৭:০৫ এএম, ২৪ মে ২০১৭

ধর্ম অবমাননার কথিত অভিযোগে এমপি সেলিম ওসমান কর্তৃক লাঞ্ছনার শিকার নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের সেই প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

এমপিওভুক্ত করে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে স্কুলের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক মোর্শেদা বেগমের কাছ থেকে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অশোক কুমার দত্তের আদালত ওই পরোয়ানা জারি করেন।

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক সোহেল আলম এর সত্যতা স্বীকার করে জানান, ঘুষ গ্রহণের মামলায় বুধবার শুনানি ছিল। শুনানি শেষে আদালত শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হারুনুর রশিদ গত ১৭ এপ্রিল শ্যামল কান্তি ভক্তকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। তবে ঘটনাটি নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এমপি সেলিম ওসমানের সঙ্গে হওয়ায় শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের পক্ষে কথা বলার লোক কমই রয়েছে। যার কারণে একজন এমপি হয়ে একজন শিক্ষককে প্রকাশ্যে কান ধরে উঠবস করানোর পরও সঠিক বিচার পাচ্ছেন না ঐ শিক্ষক। এমনটাই মনে করছেন নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল। আর সেলিম ওসমানের এ ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও অভিমত অনেকের।

প্রসঙ্গত এমপিওভুক্ত করে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত স্কুলের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক মোর্শেদা বেগমের কাছ থেকে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ এনে ওই শিক্ষক মামলা করেন। দীর্ঘ তদন্তের পর পুলিশ ৪ জনকে সাক্ষী দেখিয়ে আদালতে অভিযোগপত্রটি দাখিল করে।

উল্লেখ্য, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে ২০১৬ সালের ১৩ মে নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছিত করা হয়। স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান সবার সামনে ওই শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করান।

ওই বছরের ১৪ জুলাই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, শিক্ষার্থীকে মারধর ও শিক্ষক মোর্শেদাকে এমপিওভুক্ত করে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঘুষ নেয়ার অভিযোগে তিনটি মামলার আবেদন নারায়ণগঞ্জের আদালতে জমা পড়ে। এর মধ্যে তাৎক্ষণিক দুটি মামলা আদালত খারিজ করে দেন।

তবে এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক মোর্শেদা বেগমের কাছ থেকে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগের মামলাটি গ্রহণ করেন আদালত। দীর্ঘ তদন্তের পর পুলিশ ৪ জনকে সাক্ষী দেখিয়ে গত (২০১৭ সালের) ১৭ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্রটি দাখিল করে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর এমপিওভুক্ত করে দেয়ার জন্য শ্যামল কান্তি ভক্তকে ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ দেন ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক মোর্শেদা বেগম। এরপর আরও ১ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। পরে আরো ১ লাখ টাকা দেয়া হয়। কিন্তু সে শিক্ষক মোর্শেদা বেগমের এমপিওভুক্তের দরখাস্ত কোনো স্থানেই প্রেরণ করেনি। পরবর্তীতে এমপিওভুক্ত না হওয়ায় ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ফেরত চাইলে তিনি ২০১৬ সালের ১২ মে কোনো টাকা নেয়নি বলে অস্বীকার করেন।

শাহাদাত হোসেন/এফএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।