বড় ভাইয়েরা খোঁজ রাখেন না তাই সাপ খেলা দেখাই


প্রকাশিত: ০৫:৫৬ এএম, ২৩ মে ২০১৭

সংসারের হাল ধরতে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে সাপুড়িয়া বাবা লাল চান ইসলামের (৭০) সহযোগী হিসেবে কাজ করছে শিশু মুন্না (১০)। যে বয়সে লেখাপড়া ও খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা সে বয়সেই বিষধর সাপ নিয়ে খেলা দেখিয়ে সংসারের খরচ যোগাচ্ছে মুন্না। খেলা দেখিয়ে যা আয় হয় তাই দিয়ে চলে তাদের সংসার।

বয়সের ভারে নুয়ে পড়া লাল চানের পক্ষে আগের মত সাপ খেলা দেখানো সম্ভব না হওয়ায় ছোট ছেলে মুন্নাই এখন ভরসা। নগরীর লালবাগ কেডিসি রোডের বাসিন্দা এবং ব্র্যাক স্কুলের ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী মুন্নাই এখন হয়ে উঠেছে পরিবারের প্রধান কাণ্ডারি।

rangpur

মুন্না জানায়, বড় দুই ভাই বিয়ে করে আলাদা হয়ে গেছেন। তারা পরিবারের খোঁজ রাখেন না। তাছাড়া বাবার পক্ষে এই বয়সে আমাদের সকলের খাবার জোগাড় করা সম্ভব না। তাই তাকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে।

সে আরও জানায়, গোমা, কালি গোমা এবং মাছুয়াসহ প্রায় ১২ প্রকার সাপ রয়েছে তাদের সংগ্রহে। অধিকাংশ সাপের বিষ দাঁত ভেঙে দেয়া হয়েছে। প্রতিদিন আদালত চত্বর, বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশনসহ বিভিন্ন স্থানে সাপের খেলা দেখিয়ে গড়ে ৩শ থেকে ৪শ টাকা আয় হয়। তাই দিয়ে চলে তাদের সংসার । ঝড় বৃষ্টি এবং স্থানীয় প্রভাবশালী হকারদের কারণেও মাঝে মাঝে সাপ খেলা দেখানো সম্ভব হয় না। তখন ধারদেনা করে সংসার খরচ চালাতে হয়।

rangpur

একাধিক সাপুড়িয়ার দাবি, সাপ নিয়ে খেলা কোনো ছেলে খেলা নয়। একটু অসাবধানতায় ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। নির্দিষ্ট সময় পার হলে সাপের আবার দাঁত ওঠে । যদি কোনো কারণে তা খেয়াল করা না হয় তাহলে যে কোনো মুহূর্তে ঘটে যেতে পারে মৃত্যুর মতো ঘটনা।

মুন্নার বাবা সাপুড়িয়া লাল চান ইসলাম জানান, কেউ কী চায় শিশু সন্তানের রোজগার খেতে। কিন্তু বাধ্য হয়ে মুন্নাকে সাপ খেলা দেখানোর কাজে নিয়োজিত করেছি। বড় ছেলেরা বিয়ে করে আলাদা সংসার করেছে। বাবা-মাকে দেখে না। তবে তিনি চান না মুন্না স্থায়ী পেশা হিসেবে সাপ খেলা দেখাক। এজন্য তাকে স্থানীয় ব্র্যাক স্কুল ভর্তি করেছেন।

জিতু কবীর/আরএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।